৩০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে খুলনা নগরীর উত্তর-পশ্চিমের প্রবেশদ্বার জিরো পয়েন্টে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন রাস্তার মোড় ‘ইন্টারসেকশন’। ৭২ মিটার বৃত্তাকার গোলচত্বরের মাঝে থাকবে মেটালিক ভাস্কর্য ও পানির ফোয়ারা। গোলচত্বর থেকে আফিলগেট অভিমুখী সড়কটি ১৯৮ মিটার, রূপসা ব্রিজ অভিমুখী ৪৯ দশমিক ৫ মিটার, সাতক্ষীরা সড়কের ১০৮ দশমিক ৫ মিটার ও ময়লাপোতা অভিমুখী সড়কে ২৩ দশমিক ৫ মিটার পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই রোড হবে।
প্রধানমন্ত্রীর আগামী ৯ নভেম্বর খুলনায় আগমন ঘিরে দ্রুতগতিতে নগরীর এ অংশে চলছে উন্নয়ন কাজ।
একই সঙ্গে নগরীর দক্ষিণে রূপসা ঘাট থেকে এম এম সিটি কলেজ পর্যন্ত খানজাহান আলী সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে জোরেশোরে। বর্তমানে গ্লাক্সো মোড় সুন্দরবন কলেজ অংশে পিচ ঢালাইয়ের কাজ চলছে।
এ ছাড়া ২৫৯ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে রূপসা খানজাহান আলী (রহ.) সেতু থেকে রূপসা ট্রাফিক মোড় পর্যন্ত শিপইয়ার্ড সড়কের উন্নয়ন কাজ চলছে। এখানে চার লেনের সড়কের দুই পাশে ড্রেন, প্রশস্ত ফুটপাত ও সড়কের মাঝে শূন্য দশমিক ৯২ মিটার ডিভাইডার নির্মাণ করা হবে। রাস্তা, ডিভাইডার, ড্রেন ও ফুটপাত মিলিয়ে সড়কটি ৬০ ফুট চওড়া হবে।
সরেজমিন দেখা যায়, জিরো পয়েন্ট গোলচত্বর থেকে আফিলগেট ও সাতক্ষীরা অভিমুখী দুই সড়কে আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ চলছে। সেই সঙ্গে গোলচত্বর নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে। জিরো পয়েন্ট থেকে ময়লাপোতা আসতে গল্লামারী ময়ূর নদের ওপর ঢাকার হাতিরঝিলের আদলে দুটি স্টিল আর্চ আকৃতির সেতু নির্মাণকাজের উদ্বোধন হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৬৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।
সড়ক ও জনপথ খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী জানান, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে যানজট নিরসন, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নসহ দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ তৈরি হবে। সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে জিরো পয়েন্টে চলমান কাজ দ্রুত শেষ করা হচ্ছে। এখানে ঢালাই রোড হওয়ায় একটি অংশের ঢালাই দেওয়ার পর ২৮ দিন পর্যন্ত কিউরিং (জমাট বাঁধা) করা হয়। ফলে সময় তুলনামূলক বেশি লাগছে। অন্যদিকে খুলনার জয় বাংলা মোড়-সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড সড়কের ময়ূর নদের ব্রিজ থেকে স্ট্যান্ড পর্যন্ত পৌনে ১ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের অভাবে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নির্মাণের পর থেকেই রাস্তার পিচ ও খোয়া উঠে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়। কেডিএর নির্মাণ করা সড়কটি নিম্নমানের অভিযোগ তুলে সিটি করপোরেশনের মেয়র এখানে সংস্কার কাজ করতে আপত্তি জানিয়েছেন। ফলে এই পথে চলাচলকারী মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। কেডিএর শিপইয়ার্ড সড়ক নির্মাণকাজ নিয়েও ধীরগতির অভিযোগ রয়েছে। ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘আতাউর রহমান লিমিটেড অ্যান্ড মাহাবুব ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড’ নির্মাণকাজ শুরু করে। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু দেড় বছরে কাজ সম্পন্ন হয়েছে মাত্র ৪০-৪২ শতাংশ।
প্রকল্প পরিচালক কেডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী আরমান হোসেন জানান, জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় প্রথম দিকে নির্মাণকাজ বাধাগ্রস্ত হয়। ঠিকাদারকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত একটা টার্গেট দেওয়া আছে। তারপরও যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করতে দিনে-রাতে নির্মাণকাজ চলছে।
