রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) কার্যালয়ের সামনের সড়ক অবরোধ করেছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক শ্রমিক ঐক্য জোট। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে রাজধানীর এই প্রবেশ ও বহির্গমন পথের মহাসড়কে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। তৈরি হয় জনভোগান্তি। শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে যান চলাচল শুরু হয়। ঢাকা জেলায় নিবন্ধিত ৩ হাজার গাড়ি (সিএনজি) মহানগরে চালানোর দাবিতে গতকাল সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর বনানী বিআরটিএ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়া শুরু করেন ‘ঢাকা-থ’ তথা ঢাকা মহানগরীর বাইরের সিএনজিচালকরা। দুপুর ১২টার পর থেকে প্রধান সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে রাজধানীর এ প্রবেশ পথের মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে দুপুরের তপ্ত রোদে দুর্ভোগে পড়েন ঢাকামুখী সাধারণ যাত্রীরা। এ সময় অনেককেই যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে নিজেদের গন্তব্যে দেখা যায়। ভুক্তভোগীদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লামিয়া আক্তার বলেন, ক্লাস শেষে বাসায় ফিরতে পারছি না। এমন যানজটে হেঁটেও যাওয়া সম্ভব না। রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অসুস্থ লাগছে। এদিকে বনানী সড়ক বন্ধ থাকায় যানবাহনের চাপ বাড়ে অন্য সড়কেও। এতে কুড়িল-রামপুরা সড়কেও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। একই অবস্থা দেখা যায় গুলশান সড়কেও। এসব সড়কে গাড়ির অতিরিক্ত চাপে রাজধানীর এ অংশ প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। তবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সেনাবাহিনীর ৩০-৪০ জন সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিলে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়।
সিএনজিচালকদের দাবি, ঢাকা জেলার অন্তর্গত সিএনজিগুলোকে ঢাকা মহানগরে চলতে দিতে হবে এবং এর জন্য কোনো ধরনের মামলা দিতে পারবে না ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ বিষয়ে ‘ঢাকা-থ’ সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক শ্রমিক ঐক্য জোটের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জুয়েল মালতীয়া বলেন, ঢাকা জেলার ৩ হাজার গাড়ি (সিএনজি) মহানগরে চালানোর জন্য বারবার স্মারকলিপি দিয়েছি। বিআরটিএ বারবার আমাদের মিথ্য আশ্বাস দিয়েছে। ২০১৬ সালে আমাদের ২৬টি ইউনিয়ন কেটে নিয়ে ওয়ার্ড বানিয়েছে। মহানগর বড় বানিয়েছে। তাহলে আমরা যাব কোথায়? এখন আমার জায়গায়, আমাকে বলে অবৈধ। তিনি আরও বলেন, আজকে আমরা বিআরটিএ ঘেরাও করেছি। কারণ, এরাই রাষ্ট্রের দুষ্টু লোক। এরা ঘুষ খেয়ে এ ধরনের কাজ করে।
গুলশাল ট্রাফিক বিভাগ জানায়, বনানী বিআরটিএ কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগরীর বাইরের সিএনজিচালকরা দাবি-দাওয়া নিয়ে মূল সড়কে অবস্থান নিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে উত্তরা-মহাখালী রুটে ইনকামিং এবং আউটগোয়িংয়ে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ইনকামিংয়ে যানচলাচল করার ক্ষেত্রে কাকলী হয়ে গুলশান-২-১-আমতলী অথবা গুলশান-১ হয়ে পুলিশ প্লাজা দিয়ে এবং একইভাবে বিপরীত দিকে আউটগোয়িংয়ে ডাইভারশন দেওয়া হচ্ছে। আউটগোয়িংয়ের ক্ষেত্রে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করা যাচ্ছে। এ ছাড়া উত্তরা থেকে তেজগাঁও বা হাতিরঝিল এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে।