এক্সিম ব্যাংকের ৮৫৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে ওই ঋণ অনুমোদন করা হয় বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।
রবিবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১-এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক শাহজাহান মিরাজ মামলাটি করেন। গতকাল বিকাল সোয়া ৩টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবিরও সাবেক চেয়ারম্যান। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যাংক খাতে আলোচনায় ছিলেন তিনি। গত বছর ক্ষমতার পালাবদলের পর ১ অক্টোবর রাজধানীর গুলশান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
আক্তার হোসেন জানান, মামলায় আসামির তালিকায় আরও রয়েছেন ‘মদিনা ডেটস অ্যান্ড নাটস’-এর প্রোপ্রাইটর মোজাম্মেল হোসাইন, এক্সিম ব্যাংকের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাখা ব্যবস্থাপক আসাদ মালেক, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দ্বিতীয় কর্মকর্তা জেবুন্নেসা বেগম, সিনিয়র অফিসার ও ইনভেস্টমেন্ট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট অফিসার কাওসার আহমেদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আরমান হোসেন, সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট আনিছুল আলম, এডিশনাল ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইছরাইল খান ও মঈদুল ইসলাম, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাকসুদা খানম ও জসিম উদ্দিন ভূইয়া। এ ছাড়া সাবেক এডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহ মো. আবদুল বারি, সাবেক এডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিএফও হুমায়ুন কবীর, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরোজ হোসেন, সাবেক পরিচালক ও বর্তমানে চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন, সাবেক পরিচালক আবদুল্লাহ, পরিচালক নুরুল আমিন, পরিচালক অঞ্জন কুমার সাহা, সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক নাজমুস ছালেহিন এবং সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক মিয়া মোহাম্মদ কাওছার আলম।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ‘মদিনা ডেটস অ্যান্ড নাটস’ শাখার অসম্পূর্ণ ঋণপ্রস্তাবের বিষয়ে কোনো যাচাই, সম্ভাব্যতা যাচাই বা স্টক রিপোর্ট ছাড়াই এবং জামানতের বিষয়টি থাকলেও আসামিরা যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার, অসদাচরণ ও বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে ঋণ অনুমোদনের সুপারিশ করেন। তারা ইনভেস্টমেন্ট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য ও সভাপতি হিসেবে ঋণ অনুমোদনের সুপারিশ, বোর্ড মেমো পাঠানো এবং বোর্ডের অনুমোদন করিয়ে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো ব্যাংক খাতের উদ্যোক্তাদের কেউ কেউ আত্মগোপনে চলে যান।