জাল সিটিস্ক্যান রিপোর্টের ভিত্তিতে মেডিকেল সনদ (এমসি) এবং পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ রিপোর্টের ভিত্তিতে আদালত আসামিকে পাঠিয়েছেন জেলহাজতে। ২৬ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হন তিনি। ঘটনাটি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার উত্তর কান্দাইল কুকিমাদল গ্রামের। আদালত সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে তলব করে ব্যাখ্যা চান। তিনি ভুল স্বীকার করেছেন।
একাধিক সূত্র জানায়, উত্তর কান্দাইল কুকিমাদল গ্রামের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের মেয়েকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত পার্শ্ববর্তী সিন্দ্রিপ গ্রামের বাশার রাব্বি। গত ১৬ জানুয়ারি ওই ছাত্রী কোচিং থেকে ফেরার পথে বাশার, তার বন্ধু শান্ত মেয়েটির বান্ধবীর সহায়তায় তাকে অপহরণ করে। কিশোরগঞ্জ শহরে নিয়ে ছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্ট্যাম্প স্বাক্ষর রেখে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা করেন। ক্ষুব্ধ হয়ে রাব্বি ও তার লোকজন ২ ও ৩ মার্চ দুই দফা ছাত্রীর বাবার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, লুট ও লোকজনকে মারধর করে। দুই পক্ষই আদালতে মামলা করে। রাব্বীর পক্ষের জখমি এমদাদুলের সাধারণ আঘাতের কথা উল্লেখ করে ২৩ মার্চ কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে মেডিকেল সার্টিফিকেট এনে দেয় করিমগঞ্জ থানায়। এর ভিত্তিতে ছাত্রীর বাবা আসামি নজরুল ইসলাম গত ১৯ মে আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত ২৮ মে পরবর্তী হাজিরার ধার্য তারিখ পর্যন্ত নজরুল ইসলামের জামিন মঞ্জুর করেন। ২৮ মে বাদীপক্ষ একই ঘটনায় গুরুতর আঘাতের কথা উল্লেখ করে একই চিকিৎসক বোর্ড থেকে আরেকটি মেডিকেল সার্টিফিকেট দাখিল করে। ফলে জামিন বাতিল করে জেলহাজতে পাঠানো হয় নজরুল ইসলামকে। করিমগঞ্জ থানার ওসি শেখ মাহবুব মোরশেদের দাবি, মেডিকেল সনদের ভিত্তিতে জখমির মামলার অভিযোগপত্র এবং যথাযথ তদন্তের ভিত্তিতে আসামিদের অব্যাহতি দিয়ে অপহরণ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের আরএমও ডা. দেবাশীষ ভৌমিক বলেন, সিটিস্ক্যান রিপোর্টটি জাল বলে আগেই সন্দেহ হয়েছিল। যাদের দিয়ে ভেরিফাই করিয়েছি তারা মিথ্যা বলেছে। পুলিশ সুপার হাছান চৌধুরী বলেন, এখন বিষয়টি আদালত দেখবে। বাদীপক্ষ আদালতে নারাজি দিতে পারে। এ বিষয়ে পুলিশের কোনো অনিয়ম হলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।