অবশেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে সমস্যাগ্রস্ত পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে তিনটি একীভূত হতে রাজি হয়েছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক একীভূত হওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সম্মতি দিয়েছে। তবে এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক সময় চেয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর আর্থিক খাতের অনিয়ম ও লুটপাটে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু ব্যাংক একীভূত করার উদ্যোগ নেন। প্রাথমিকভাবে পাঁচটি ব্যাংককে এ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর মধ্যে চারটি ছিল আলোচিত ব্যবসায়ী এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে, আর এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন নজরুল ইসলাম মজুমদার।
বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলোর আর্থিক অবস্থা নিয়ে নথি উপস্থাপন করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভাষ্য, একীভূত হওয়া ছাড়া এই ব্যাংকগুলোর সামনে কোনো বিকল্প নেই, কারণ সব সূচকই নেতিবাচক। গ্রাহকেরা আমানত তুলতে না পারায় পুরো খাতেই চাপ বাড়ছে।
গত সপ্তাহে ধারাবাহিক বৈঠকে তিন ব্যাংক একীভূত হতে সম্মত হয়। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল আমিন সাংবাদিকদের জানান, তাদের ব্যাংকের ১৪ হাজার কোটি টাকার ঋণের মধ্যে ১২ হাজার কোটি টাকা এস আলম গ্রুপ নিয়েছে এবং তা এখন খেলাপি। জামানত আছে ২৫ শতাংশেরও কম। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম সাদিকুল ইসলাম বলেন, এস আলম গ্রুপ তাদের ব্যাংক থেকেও ৬ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। তবে সময় ও মূলধন জোগান পেলে ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এর আগে গত সপ্তাহে এক্সিম ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক হয়। এক্সিম ব্যাংক তাৎক্ষণিক একীভূত প্রক্রিয়ায় না গিয়ে নিজস্ব কর্ম পরিকল্পনা উপস্থাপন করে। চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক সেই রোডম্যাপ আরও স্পষ্ট করে উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, পাঁচ ব্যাংকের সম্মিলিত মূলধন ঘাটতি ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ৮৬ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।