রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানিবহ ইউনিয়নের শিবরামপুর গ্রামে ঝাঁক বেঁধে ডানা মেলেছে কয়েক হাজার অতিথি পাখি। পাখিদের কিচিরমিচিরে মুখরিত হয়ে উঠেছে চারপাশ। মগডালে বাহারি রঙের এসব অতিথি পাখির খুনসুটি প্রকৃতির অপরূপ অলংকার হয়ে উঠেছে। গতকাল সকালে সরেজমিন শিবরামপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কয়েক হাজার পাখি মগডালে বাসা বেঁধেছে। এর মধ্যে অনেক পাখিকে খাবারের সন্ধানে বের হতে দেখা যায়। শিবরামপুর গ্রামে বিভিন্ন গাছের মগডালে পাখিগুলো বাসা বেঁধেছে। দিনভর কিচিরমিচির শব্দ করে।
চলতি বছরের মার্চের মাঝামাঝি পাখিগুলো আসে ওই গ্রামে। বর্তমানে শামুকখোল, বাদুড় ও পানকৌড়িসহ বেশ কয়েক প্রজাতির কয়েক হাজার পাখি এখানে রয়েছে। মগডালে অর্ধশত গাছে বাসা বেঁধেছে পাখিগুলো। স্থানীয়রা জানান, পাখি দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এখানে আসে। কেউ ছবি তোলেন, ভিডিও করেন, কেউ কিচিরমিচির শব্দ রেকর্ড করেন। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষ এখানে আসে। রাজবাড়ী সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, পরিযায়ী পাখি মূলত শীতপ্রধান দেশ থেকে বাংলাদেশে আসে। খাবার সংকট, বংশবৃদ্ধি ও পরিবেশগত সমস্যার কারণে তারা এ দেশে আসে। বংশবৃদ্ধি হলে আবার উপযুক্ত স্থানে ফিরে যায়। বিশেষ করে শামুকখোল, সরালি হাঁস, চোখাচোখি হাঁস, বালিহাঁস, ধানচোরা, ডাহুকসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বাংলাদেশ আসে। পাখিগুলো বাংলাদেশের প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য খুবই উপকারী। এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ করা আমাদের সবার দায়িত্ব। রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বলেন, ‘রাজবাড়ীতে অতিথি পাখি আসার খবর পেয়েছি। যেদিন থেকে পাখির সংবাদ শুনেছি সেদিন থেকে পাখিগুলো যেন হুমকির মধ্যে না পড়ে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বন বিভাগ ও থানা পুলিশ পাখি রক্ষায় কাজ শুরু করেছে।’