‘জুলাই জাতীয় সনদ’-এর আইনি স্বীকৃতি, শহীদ পরিবারের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষায় রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যরা। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তারা বলেন, যেসব আদর্শ ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তাদের সন্তানরা জীবন উৎসর্গ করেছেন, তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। এ সময় শহীদ পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের সমস্যা ও দাবিগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করলেও অদৃশ্য প্রতিবন্ধকতার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে বিভিন্ন দপ্তরে তারা লাঞ্ছনা ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে জুলাই জাতীয় সনদের একটি আইনি ভিত্তি তৈরি করা প্রয়োজন, যাতে শহীদদের আদর্শ ও অবদান রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পায়। একই সঙ্গে অবহেলা ও হয়রানি প্রতিরোধে পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
এ বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা অবগত যে জুলাই ফাউন্ডেশন এ বিষয়ে কাজ করছে, তবে শহীদ পরিবারগুলো যে প্রত্যাশিত সেবা পাচ্ছেন না সে বিষয়ে আগে জানা ছিল না। পরে কমিশন তাদের আশ্বস্ত করে, উত্থাপিত সব বিষয় যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে এবং প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ চাওয়ার বিষয়ে সহযোগিতা করবে। বৈঠকে জুলাই শহীদ পরিবারের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন- শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা আলহাজ শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া, শহীদ মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান, শহীদ ইয়ামিনের বাবা মো. মহিউদ্দীন, শহীদ জাবির ইব্রাহিমের বাবা কবির হোসেন, শহীদ শাহরিয়ারের বাবা মোহাম্মদ আবদুল মতিন, মো. শহীদ রিয়ানের বাবা গোলাম রাজ্জাক, শহীদ মোন্তাসিরের বাবা সৈয়দ গাজীউর রহমান, শহীদ আবদুল্লাহের ভাই মো. গাউছ উল্লাহ, শহীদ আবদুল হান্নানের ছেলে সাইফ আহমেদ খান এবং মো. ওবায়দুল হক। এর আগে গত ১৭ অক্টোবর একই স্থানে জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সেই সভায় স্বাস্থ্যসেবা, আইনি সুরক্ষা এবং নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) প্রদানের দাবি তুলে ধরেন জুলাই যোদ্ধারা। একই সঙ্গে গত ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শুরুর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে অনা কাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তারা। এ ছাড়া ওই ঘটনায় জুলাই যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ৪টি মামলা প্রত্যাহারে কমিশনের সহায়তা কামনা করেন। সভায় কমিশনের পক্ষ থেকে তাদের দাবিগুলোও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলে জানান কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।