ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে পূর্বশত্রুতাসহ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গুলিবিদ্ধ শিপন মিয়া (৩০) নামের ওই ব্যক্তি মারা যান। তিনি উপজেলার নূরজাহানপুরের মোন্নাফ মিয়া ওরফে কুখ্যাত মনেক ডাকাতের ছেলে। শিপন মিয়ার মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ফের হামলার আতঙ্কে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ইয়াছিন মিয়া (২০)। তিনি উপজেলার আলমনগর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে এবং উপজেলার বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলের কর্মচারী ছিলেন। তাকে ঢাকায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নবীনগর থানা সূত্রে জানা গেছে, এ দুজনের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ২০-২২টি করে মামলা আছে।
গুলিবিদ্ধ আহত ব্যক্তিরা হলেন বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের এমরান হোসেন (৩৮) এবং হোটেলের কর্মচারী উপজেলার চরলাপাং গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে নুর আলম (১৮)। এমরান উপজেলার শ্যামগ্রামের মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক। গুলিবিদ্ধ চারজনকে রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। স্থানীয় লোকজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মোন্নাফ মিয়া ও তার ছেলে শিপন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল। তাদের সঙ্গে একই এলাকার থোল্লাকান্দি গ্রামের রিফাত মিয়ার বিরোধ চলছিল। শনিবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে শিপন মিয়া রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। এ সময় পূর্ব শত্রুতাসহ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে আরাফাতের নেতৃত্বে সশস্ত্র একটি দল হোটেলে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে শিপনসহ হোটেলের দুই কর্মচারী ইয়াসিন ও নুর আলম গুলিবিদ্ধ হন। গুলির শব্দে বাজারজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলার পর আরাফাত ও তার সহযোগীরা দ্রুত পালিয়ে যান। শিপনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর নুরজাহানপুরে পৌঁছালে মোন্নাফ মিয়ার নেতৃত্বে একদল লোক গণি শাহ মাজারের অদূরে তালতলায় এমরান হোসেনের কার্যালয়ে হামলা চালান। সেখানে এমরান গুলিবিদ্ধ হন। এমরান মাস্টারের বাড়ি বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামে। বিক্ষুব্ধ লোকজন থোল্লাকান্দি গ্রামে হামলা চালিয়ে একাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) পিয়াস বসাক বলেন, পূর্ব শত্রুতাসহ আধিপত্য বিস্তারের জেরে গুলিবিদ্ধ হয়ে এখন পর্যন্ত দুজন নিহত হয়েছেন। সকালে মোন্নাফের ছেলে শিপন এবং বিকালে ইয়াছিন নামে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে। পরবর্তী যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় শনিবার রাত থেকে এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ, র্যাব ও সেনা সদস্যরা টহল দিচ্ছে।