পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, দেশে বন্যপ্রাণী না থাকলে, বন ধ্বংস হয়ে যাবে। আর বন ধ্বংস হলে আমরা বেঁচে থাকার জন্য অতিপ্রয়োজনীয় অক্সিজেন ও অন্যান্য উপাদান পাব না। আমাদের টিকে থাকার স্বার্থেই বনের বন্যপ্রাণীর অসংখ্য প্রজাতিকে সম্মিলিতভাবে রক্ষা করতে হবে।
বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস-২০২০ উদযাপন উপলক্ষে মঙ্গলবার (৩ মার্চ) বিকেলে আগারগাঁওস্থ বন অধিদপ্তরে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হচ্ছে‘পৃথিবীর অস্তিত্বের জন্য প্রাণীকূল বাঁচাই’।
এসময় তিনি আরও বলেন, জীববৈচিত্র সংরক্ষণে অবদান রাখায় জনগণকে উৎসাহ প্রদানের জন্য সরকার ‘বঙ্গবন্ধু এওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন’ নামে জাতীয় পুরস্কার প্রবর্তন করেছে।
বনমন্ত্রী বলেন, প্রায় ১ হাজার ১শত ৬৩ প্রজাতির বৈচিত্র্যময় প্রাণীর আবাসভূমি আমাদের বাংলাদেশ। এখানে রয়েছে বৈচিত্র্যময় বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল বিশ্বের একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন- সুন্দরবন, চিরহরিৎ বৃক্ষের বন, পত্রঝরা বৃক্ষের বন, শাল বন ও গ্রামীণ বন। সরকার দেশের এ সকল বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের লক্ষ্যে আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ মোতাবেক বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট গঠন করা হয়েছে। এ ইউনিট ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী, বন্যপ্রাণীর দেহাংশ উদ্ধার, গোয়েন্দা নেটওয়ার্কিংসহ বন্যপ্রাণী সংশ্লিষ্ট অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করছে। এ ইউনিট এখন পর্যন্ত ৩১ হাজার ৬শত ২টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও প্রাকৃতিক পরিবেশে অবমুক্ত করেছে ।
শাহাব উদ্দিন বলেন, গাজীপুরের ‘শেখ কামাল ওয়াইল্ডলাইফ সেন্টার’ এ বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনাকে অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করে ৪৫টি এলাকাকে ‘‘রক্ষিত এলাকা” ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯টি জাতীয় উদ্যান, ২০টি অভয়ারণ্য, ০৩টি ইকোপার্ক, ০২টি বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা ও ১টি মেরিন প্রটেক্টেড এলাকা।
তিনি আরও জানান, বন্যপ্রাণীর বংশবিস্তার ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে কক্সবাজার ও গাজীপুরে ২টি সাফারীপার্ক স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি উপজেলার লাঠিটিলায় ১টি নতুন সাফারী পার্ক স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মোহাম্মদ সফিউল আলম চৌধুরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান, এনডিসি, অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ বিল্লাল হোসেন এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ