শুধু একটি বিয়ার মগের জন্য ধুন্ধুমার!
রেস্তোরাঁয় গোলমাল পাকানোর অভিযোগে দশ ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রকে পাকড়াও করল পুলিশ। অভিযোগ, দুর্গাপুরে একটি শপিংমলের রেস্তোরাঁয় 'ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি'র (এনআইটি) ওই ছাত্রেরা ভাঙচুর চালিয়েছেন। বাধা দিতে গেলে মারধর করেছেন সেখানকার কয়েকজন কর্মী ও শপিংমলের রক্ষীদের। হামলার মুখে পড়েছে পুলিশও। পাঁচ পুলিশকর্মী, পানশালার দুই কর্মী ও দুই রক্ষী হাসপাতালে ভর্তি। সবই শুধু একটি 'বিশেষ'বিয়ার মগের জন্য!
সোমবার রাতে পানভোজনের জন্য এনআইটি-র তিন ছাত্র ও এক ছাত্রী ওই রেস্তোরাঁয় যান। তারা রাত ৯টা থেকে ঘণ্টা দেড়েক সেখানে কাটিয়ে বেরোনোর সময়েই গোলমালের সূচনা। রেস্তোরাঁয় কর্তৃপক্ষ পুলিশে অভিযোগ করেছেন, এক ছাত্র দাবি করেন, ছাত্রীটি যে মগ থেকে পান করেছেন, সেটি তিনি সঙ্গে নিয়ে যাবেন। রেস্তোরাঁর কর্মীরা জানান, এমন নিয়ম নেই। অভিযোগ, তাতেই ক্ষেপে ওঠেন ওই ছাত্রেরা। মারধর শুরু করেন দুই কর্মীকে। শপিংমলের নিরাপত্তারক্ষীরা ছুটে এলে তাদের সঙ্গেও একপ্রস্ত ধস্তাধস্তি হয়। রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হয় ওই পড়ুয়াদের।
পুলিশ সূত্রের দাবি, ক্ষিপ্ত ছাত্রেরা ফোন করেন সহপাঠীদের। কিছু ক্ষণের মধ্যে ৩০-৩৫ জন পড়ুয়া সেখানে পৌঁছন। অভিযোগ, চেয়ার-টেবিল থেকে শুরু করে গ্লাস-বোতলসবই তছনছ শুরু করেন তাঁরা। খবর পেয়ে এক ভ্যান পুলিশ গিয়েও ওই ছাত্রদের শান্ত করতে পারেনি। শেষে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব বড় বাহিনী নিয়ে পৌঁছলে ছাত্রেরা পালাতে শুরু করেন। কিন্তু ধরা পড়ে যান দশ জন।
গোলমালের এখানেই শেষ নয়। পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করেছে, এই অভিযোগে শপিংমল থেকে কিছুটা দূরে গান্ধী মোড়ে বিক্ষোভ শুরু করেন ওই পড়ুয়ারা। পুলিশের গাড়ি তাক করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। কয়েকজন পুলিশকর্মী আহত হন। পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করলে কলেজের দিকে দৌড় দেয় ছাত্রেরা।
এডিসিপি (পূর্ব) জানান, আটককৃতদের মধ্যে চারজন চতুর্থ বর্ষ ও বাকিরা তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তাদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, পুলিশকে কাজে বাধাসহ ছ'টি ধারায় অভিযোগ হয়েছে। মঙ্গলবার আইনজীবীদের কর্মবিরতি থাকায় ধৃতদের দুর্গাপুর আদালতে হাজির করানো হলেও শুনানি হয়নি। তাদের জেল-হাজতে পাঠানো হয়। আজ বুধবার তাদের ফের আদালতে তোলা হবে। ছাত্রদের লাঠিপেটা করার কথা পুলিশ মানেনি।
ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন ক্লাস বয়কট করেন এনআইটি-র পড়ুয়ারা।
সূত্র: আনন্দবাজার।