উৎসব পালনের অজুহাতে নীরিহ পশুদের ওপর নৃশংস অত্যাচার চালানোর ঘটনা বিশ্বে নতুন কিছু নয়। আধুনিক সমাজে এই ধরনের নৃশংসতা তুলনামূলকভাবে কমে এলেও পুরোপুরি যে বন্ধ হয়নি তারই একটি দৃষ্টান্ত নেপালের খোকানা জেলায় অনুষ্ঠিত বার্ষিক দেওপোখারি উৎসব।
এই অনুষ্ঠানে একটি ছাগলকে একটি পুকুরের পানিতে আছড়ে, গলায় ফাঁস লাগিয়ে, ছাগলটির গায়ে কামড় বসিয়ে তাকে হত্যা করা হয় এবং তারপর তার শরীর থেকে মাংস টেনে-হিঁচড়ে আলাদা করে দেওয়া হয়।
কিন্তু এমন নৃশংস রীতি পালন করার কারণ কী? গ্রামের মানুষদের বিশ্বাস, ওই পুকুরে একটি রাক্ষস বাস করে। সেই রাক্ষসের কারসাজিতেই পুকুরে ডুবে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
মজার বিযয় হল, এই উৎসবে যিনি শেয পর্যন্ত ছাগলটিকে হত্যা করেন, তাঁকেই উৎসবে বিজয়ী বলে ঘোষণা করা হয় এবং তিনিই উৎসবের শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন।
এই উৎসবের নৃশংসতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মহলে প্রতিবাদ হয়েছে। অবলা প্রাণীদের ওপর এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন নেপালের অ্যানিমাল রাইটস ক্লাবের সভাপতি সুরজন শ্রেষ্ঠা।
তিনি বলছেন, ‘এই উৎসবে একটি ছাগলকে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে কষ্ট দিয়ে তিলে তিলে হত্যা করা হয়। একটি প্রাণীর পক্ষে এর থেকে কষ্টকর আর কী হতে পারে।’
সংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস যে মানুষকে কত নিচে নিয়ে যেতে পারে তারই একটি দৃষ্টান্ত দেওপোখারি উৎসব। দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, আধুনিক সমাজেও এই ধরনের অনুষ্ঠান প্রচলিত রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৯ এপ্রিল, ২০১৬/ হিমেল-০৯