মাঠের এক কোনায় নেট। সেখানেই ব্যাটিংয়ের মহড়ায় ব্যস্ত থাকে সকল কচিকাঁচারা। সেখানেই কিছু একটা হচ্ছে। দূর থেকে দেখলে বোঝা যায় না যে নেটে কোন ব্যাটসম্যান বল নক করছে। তবে আওয়াজ আসছে। কাছে গিয়ে দেখা গেল। খুব ছোট এক ছেলে! প্যাড পরে নিজের ছোট ব্যাট হাতে নিয়ে নেটে প্র্যাক্টিস করছে সে। আর এ দৃশ্য সকলে তাকিয়ে দেখে। ছেলেটির নাম শায়ান জামাল। বয়স মাত্র ৪ বছর।
তার বয়সি অন্য ছেলেরা যে সময় ঠিক মতো খেলনা ধরতে পারে না, শায়ান অনায়াসে কভার ড্রাইভ আর ফরওয়ার্ড ডিফেন্সের অর্থ বলে দিতে পারবে। শুধু বলবে কেন, রীতিমতো করেও দেখাচ্ছে। এই ৪ বছর বয়সেই নিজের স্কুল দক্ষিণ দিল্লির হমদর্দ পাবলিক স্কুলের অনূর্ধ্ব ১২ দলে সুযোগ পেয়েছে সে।
শায়ানের বাবা আর্শাদ দিল্লিতে একটা ছোট ব্যবসা করেন। নিজেও এক সময় প্রথম ডিভিশনে ক্লাব ক্রিকেট খেলতেন। ছেলের ক্রিকেট প্রীতির বিষয়টি তাই ভালোমতোই বুঝেছেন। ব্যাট হাতে পাওয়ার পর ছেলে একেবারে পাল্টে যায়। আর্শাদ বলেন, 'শায়ানের ক্রিকেটিং সেন্স খুব ভালো। ক্রিকেট খেলার জন্য সব সময় রেডি। যদি এক-দু' দিন বিশ্রাম দেওয়া হয়, তিন দিনের দিনই প্রশ্ন করবে কেন নেট প্র্যাক্টিস হচ্ছে না। ওর ট্যালেন্ট জন্মগত। আমি শুধু একটু ঘষামাজার কাজ করছি।'
ছোট বয়সেই রান করার খিদে পুরোমাত্রায় রয়েছে শায়ানের। বিরাট কোহলির ভক্ত শায়ান বলে, 'আমি একদিন ভারতের হয়ে ক্রিকেট খেলতে চাই। বিরাট কোহলির মতো। আমার পছন্দের ক্রিকেটার তিনি। তিনি খুব ভালো ব্যাটসম্যান। অনেক রান করেন, সেঞ্চুরি করেন।' শুধু গুছিয়ে ব্যাটিংটাই করে না, সঙ্গে বেশ গুছিয়ে কথাও বলতে পারে শায়ান। তার বয়সে বেশিরভাগ বাচ্চারা সেঞ্চুরি'র অর্থই বলতে পারবে না!
আর্শাদ জানিয়েছেন, কোচেরা ইতিমধ্যেই তাঁর ছেলের প্রতি আস্থা রাখছেন। না হলে এই বয়সে ১২ বছর বয়সিদের সঙ্গে খেলার সুযোগ পেত না শায়ান। আর্শাদের কথায়, 'আমার পরিবার এবং বন্ধুরা মনে করেন আমি শায়ানের পেছনে আমার সময় নষ্ট করছি। কিন্তু আমার মনে হয় ঈশ্বর ওকে অসাধারণ প্রতিভা দিয়ে পাঠিয়েছেন। যা আমি ঠিক মতো গড়ে তুলতে পারব না। আমার বিশ্বাস ঈশ্বরই সঠিক পথ নির্দেশ করবেন।'
বিডি প্রতিদিন/২৪ জুলাই ২০১৬/হিমেল-১১