লোকে বলে যাহার কোন গুণ নাই, তাহারে কয় বেগুন। তবে গুণমুক্ত হওয়ার কারণেই এটার চাহিদা এখন দ্বিগুণ। বিশেষ করে টুইট মহলে। মঙ্গলবার সাত সকালে কনডম প্রস্তুতকারক সংস্থা ডুরেক্সের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা করা হয়, খুব শিগগিরিই বেগুন ফ্লেভারের কনডম আনতে চলেছে তারা। কনডমের প্যাকেটের একটি ছবিও পোস্ট করা হয় টুইটে।
কনডম প্রস্তুতকারক সংস্থার এই বিজ্ঞাপনী টুইট দেখার পর গতকাল থেকেই ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ চমকেছেন, কেউ ধমকেছেন, কেউ বা অপার বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছেন, এত কিছু থাকতে কেন বেগুন?
প্রশ্নটা অবশ্য নিছক রসিকতা থেকে গুরুগম্ভীর সমাজবিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান পর্যন্ত বহু বিষয়েই ছড়িয়েছে।
বেগুনের খাদ্যগুণ যৌন উত্তেজনা বাড়ায় কি না সে প্রশ্ন যেমন আলোচিত হয়েছে, তেমনই হয়েছে যৌনাঙ্গের প্রতীক হিসাবে বেগুনের তাৎপর্য! ঘটনাচক্রে গতকালই নিজের পড়ার ঘরে বসে নাতনিদের কাগজে-কলমে চিঠি লেখার একটি ছবি টুইট করেছেন অমিতাভ বচ্চন। গত ২৪ ঘণ্টায় লেখায় মগ্ন অমিতাভের সেই ছবি দেখেছেন ৭০ হাজারের বেশি মানুষ। কিন্তু বেগুনগন্ধী কনডমের বিজ্ঞাপনের দর্শক সংখ্যা তাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে!
একটি ওয়েবসাইটের দাবি, এই মুহূর্তে আমেরিকায় বেগুনই নাকি সবচেয়ে সাড়া জাগানো ‘ফ্যালিক ভেজিটেবল’, অর্থাৎ, পুরুষাঙ্গের প্রতীক হিসাবে শসা বা কলাকেও ছাপিয়ে উঠেছে বেগুন। সম্ভবত সেটা মাথায় রেখেই পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় এই সব্জির গন্ধ লেগেছে কনডমেও!
বেগুনগন্ধী কনডম নিয়ে সবচেয়ে বেশি কটুকটাক্ষ করেছেন ভারতের টুইটার ব্যবহারীরা। একজন লিখেছেন, ‘এটা জানার পর বেগুনের ভর্তাও অন্য চোখে দেখব’! অন্য একজনের প্রতিক্রিয়া, ‘দয়া করে ওই কনডম সঙ্গে নিয়ে বিশিষ্ট শেফ সঞ্জীব কপূরের কাছে যাবেন না। উনি খুব ভাল ভর্তা রাঁধেন’! কেউ কেউ পরিহাস করে টিন্ডা, বিন্স এবং শসার ফ্লেভার দেওয়া কনডমের জন্যও টুইটারের মাধ্যমে আবেদন করেছেন ওই প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছে! এর ফলে কেউ কেউ মনে করছেন, ভারতীয়রা বেগুনকে ভিন্ন চোখে দেখেন। সম্ভবত তাদের মানসিকতায় বেগুন এখনও সেভাবে পুরুষাঙ্গের প্রতীক হয়ে ওঠেনি।
সাধারণত ‘ওরাল সেক্সে’ ব্যবহৃত ফ্লেভার্ড কনডমে থাকে চকলেট, স্ট্রবেরি, কোলা প্রভৃতির ফ্লেভার। এজন্য তাতে চিনি বা অন্যান্য রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, ওই পদার্থগুলির ফলে স্ত্রীর যৌনাঙ্গে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। সাধারণ যৌন সঙ্গমের ক্ষেত্রে তাই ফ্লেভার্ড কন্ডোম ব্যবহার করা যেতে পারে কি না, তা ওই কন্ডোমের প্যাকেটের উপরেই লেখা থাকে।
দু’দিন ধরে বিষয়টি নিয়ে অগাধ চর্চার পরে ওই বিজ্ঞাপনের নিহিত উদ্দেশ্য ফাঁস করেছে সংস্থাটি। জানানো হয়েছে, এটা আসলে একটি কনডম ইমোজি! নিরাপদ যৌন সম্পর্ক নিয়ে একটি প্রচারের অংশ! সংস্থার এক বিপণন কর্মকর্তা ক্যারেন চিজহোমের কথায়, ‘‘অল্প বয়সিদের নিরাপদ যৌন সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা, বিড়ম্বনামুক্ত আলোচনায় উৎসাহ দিতেই ওই ইমোজি তৈরি করা হয়েছে।’’
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন ও এবেলা
বিডি প্রতিদিন/৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬/হিমেল-০৩