মানুষ সমুদ্রের প্রাণী নয়, তার পরে বড় দাঁত বা ধারালো কিছুও নেই। এ অবস্থায় বিশাল হাঙ্গরকে সমুদ্রে পরাজিত করা মানুষের পক্ষে অনেকটা রূপকথার মতো। কিন্তু তেমন ঘটনার দেখা পাওয়া গেল জোয়ে ট্যানার নামে এক ব্যক্তির ঘটনায়। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে ফক্স নিউজ।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওরিগন রাজ্যের অগভীর সমুদ্রে সাঁতার কাটছিলেন সার্ফার জোয়ে ট্যানার। তিনি একটা বড় ঢেউয়ের অপেক্ষা করছিলেন। তার আশা বড় ঢেউ আসলেই তিনি বোর্ডের ওপর উঠে সার্ফিং শুরু করবেন। কিন্তু এ সময়েই হঠাৎ টের পেলেন কিছু একটা তার পা টেনে ধরেছে।
ট্যানার নিচে তাকিয়ে দেখতে পান ভয়ঙ্কর এক হাঙ্গর আক্রমণ করেছে তাকে। হাঙ্গরটির রয়েছে অসংখ্য ধারালো দাঁত। এ অবস্থায় ২৯ বছর বয়সী ট্যানার মোটেই হাল ছেড়ে দেননি। এরপর শুরু হয় হাঙ্গরের সঙ্গে তার যুদ্ধ। এ অবস্থায় তিনি হাঙ্গরের কানকোতে ক্রমাগত আঘাত করতে থাকেন। এতে এক পর্যায়ে হাঙ্গরটি তাকে ছেড়ে চলে যায়।
স্থলভাগের কাছেই সাঁতার কাটছিলেন তিনি। কোনোক্রমে সাঁতরে কাছাকাছি স্থলে উঠে আসেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, হাঙ্গরের কামড় দেওয়ার বিষয়টি খুবই যন্ত্রণাদায়ক ছিল।
তবে হাঙ্গরের হাত থেকে ফিরে আসার বিষয়টিকে খুবই অস্বাভাবিক বলছেন মেরিন বায়োলজিস্টরা। তবে এটা হয়েছে কারণ তিনি সঠিক কাজটিই করতে পেরেছিলেন, যা ছিল এর দুর্বল স্থানে আঘাত করা। এছাড়া মাটিতে পৌঁছার পর তার প্রাথমিক চিকিৎসাও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
এদিকে ট্যানারের ওপর আক্রমণের এ ঘটনাটিকে অনেক বিশেষজ্ঞই সরাসরি আক্রমণ না বলে বরং কৌতুহলী হাঙ্গরের কাণ্ড বলছেন। তাদের মত, হাঙ্গরটি মূলত খাওয়ার জন্য নয় বরং কৌতুহলবশতই তাকে আক্রমণ করেছিল। আর পছন্দ না হওয়ায় এবং দাপাদাপি করায় তাকে ছেড়ে দিয়েছে।
এ বিষয়ে সেইন্ট ক্যাথরিন কলেজের বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের প্রফেসর অ্যান্ড্রিউ নসেল বলেন, হাঙ্গর যখন কোনো অভিনব বস্তু বা প্রাণী দেখতে পায় তখন তা খাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সময় নেয়। আর এসব ক্ষেত্রে প্রায়ই সামান্য চেখে দেখে। ভালো লাগলে আরও খায়। ভালো না লাগলে খায় না। এক্ষেত্রে ট্যানারের ওপর আক্রমণটা সেরকম ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
বিডি প্রতিদিন/ ১০ নভেম্বর ২০১৬/ এনায়েত করিম-২