হৃদযন্ত্রের 'পাম্পিং' ক্ষমতা কমে প্রায় বিকল হয়ে যাওয়ায় এক প্রবীণের দেহে কৃত্রিম হৃদযন্ত্রের অংশবিশেষ স্থাপন করা হয়েছে। গত ডিসেম্বরে ভারতের দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে এই প্রক্রিয়ায় সব মিলিয়ে খরচ হয় কোটি টাকার বেশি।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অনিল মিশ্রের নেতৃত্বে এক চিকিৎসক দল ‘হার্ট মেট-টু’ নামের ওই যন্ত্রটি প্রবীণের শরীরে বসিয়েছিলেন।
এক চিকিৎসক জানান, ওই প্রক্রিয়ায় সাহায্য করতে বিদেশ থেকেও এসেছিলেন চিকিৎসক-টেকনিশিয়ানরা। ওই অস্ত্রোপচার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু না বললেও অনিলের বক্তব্য, ‘যন্ত্র স্থাপনের কাজ হয়েছে।’
আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ওই রোগীর পরিবার অস্ত্রোপচারে সম্মতি দেওয়ার পর শুরু হয়েছিল প্রস্তুতি। এক চিকিৎসক জানান, ওই প্রবীণের হৃদযন্ত্রের ‘পাম্পিং’ ক্ষমতা কমে হয়েছিল ১৫-২০ শতাংশ। ফলে সংশ্লিষ্ট রোগীর হৃদযন্ত্রে রক্ত পরিশুদ্ধ হলেও তা শরীরের সব অংশে পরিবাহিত হচ্ছিল না। তাই অক্সিজেনযুক্ত বিশুদ্ধ রক্তকে শরীরে পরিবাহিত করার জন্য প্রয়োজন হয়েছিল কৃত্রিম ‘পাম্পিং’ ব্যবস্থার। সে কারণেই ‘হার্ট মেট-টু’ বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট ‘হার্ট মেট-টু’ যন্ত্রটি এক কথায় কৃত্রিম হৃদযন্ত্র। আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে এ প্রক্রিয়ার জন্য কোটি টাকার উপরে খরচ হয়েছে।
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সরোজ মণ্ডলের মতে, ‘পাম্পিং সিস্টেম’ নষ্ট হয়ে গেলে হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে। তিনি আরও বলেন, ‘‘মানুষের হৃদযন্ত্র তো আর চাইলেই পাওয়া যায় না। কখনও কারও ‘ব্রেন ডেথে’র পর সংগৃহীত হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হয়। তবে হার্ট মেট-টু বসালে তা হৃদযন্ত্রের কাজের প্রক্সি দেয়। দু’তিন বছর সচল রাখে হৃদযন্ত্রকে।’’
তবে সূত্রে জানা যায়, কলকাতার বাসিন্দা ওই প্রবীণের শরীরে কৃত্রিম হৃদযন্ত্রের সফল স্থাপন হলেও সম্প্রতি তিনি মারা যান। শরীরের অন্য পুরনো সমস্যার কারণে তার মৃত্যু হয়। তবু কোটি টাকা খরচ করে হৃদয় সচল রাখার চেষ্টা সফল হয়েছিল।
বিডি প্রতিদিন/৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/এনায়েত করিম