গ্রিসের একটি রাজকীয় সমাধিতে পাওয়া একটি কাপড়ের টুকরোকে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের পোশাক বলে দাবি করেছেন গবেষকরা। ডেমোক্রিটাস ইউনিভার্সিটি অব থ্রেসের অধ্যাপক এমিরেটাস অ্যান্টোনিস বার্তসিওকাস সম্প্রতি এ দাবি করেন।
গ্রিসের ভার্জিনা এলাকায় পাওয়া এই কাপড়টি আগে আলেকজান্ডারের বাবা ফিলিপ দ্বিতীয়ের বলে মনে করা হলেও এখন এটি আলেকজান্ডারের সৎভাই ফিলিপ তৃতীয় আরহিডাইয়াসের বলে ধারণা করা হচ্ছে।
১৯৭৭ সালে পাওয়া এই কাপড়ের টুকরোটি প্রথমে একটি সোনার বুকে পাওয়া যায়। এটি এমন একটি সমাধিতে ছিল যা আগে ফিলিপ দ্বিতীয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বার্তসিওকাসের মতে, এই সমাধিটি আসলে ফিলিপ তৃতীয় আরহিডাইয়াস ও তার স্ত্রী ইউরিডাইসের। তিনি ইতিহাস, সমাধির দেয়ালে আঁকা ছবি এবং কাপড়ের গঠন বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান।
বার্তসিওকাস আরও বলেন, কাপড়টি মূলত আলেকজান্ডারের ছিল। আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর এটি তার সৎভাই ফিলিপ তৃতীয়ের কাছে যায়। এটি রাজপরিবারে ঐতিহ্য রক্ষার প্রতীক। কাপড়টি পারস্যের রাজাদের পোশাকের মতো রঙে রঞ্জিত এবং এতে তুলা ও হান্টাইটের স্তর রয়েছে।
বার্তসিওকাসের দাবিতে গবেষকদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। গ্রিসের ন্যাশনাল হেলেনিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের গবেষক হ্যারিকলিয়া ব্রেকুলাকি বলেন, কাপড়টি একটি পোশাক নয়, বরং হাড় মোড়ানোর স্কার্ফের মতো। ভার্জিনার খনন প্রকল্পের পরিচালক আথানাসিয়া কিরিয়াকু বলেন, বার্তসিওকাস কাপড়টি সরাসরি পরীক্ষা করেননি, তাই তার দাবি ভিত্তিহীন।
তবে কিছু গবেষক বার্তসিওকাসের বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সুসান রটরফ কাপড়ের তুলার স্তরকে আলেকজান্ডারের পারস্য জয়ের সময়ের উপযুক্ত বলে মনে করেন। ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের অধ্যাপক রিচার্ড জানকো বলেন, কাপড়ের তুলা ফিলিপ দ্বিতীয়ের আমলেও বাণিজ্যের মাধ্যমে গ্রিসে পৌঁছাতে পারে।
সমাধির আসল মালিক কে, তা নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকলেও এই কাপড়টি আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের সময়কার রাজকীয় ইতিহাসে নতুন আলো ফেলেছে। গবেষণার এই বিতর্ক প্রাচীন গ্রিক ইতিহাস নিয়ে আরও অনুসন্ধানের সুযোগ তৈরি করেছে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল