আওয়ামী লীগ সরকারকে জনগণ অনাস্থা দিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘এই সংসদে জনগণের দ্বারা কেউ নির্বাচিত নয়। সংসদে কতগুলো সঙ বসে থাকবে। বিরোধী দলবিহীন সংসদ।
তিনি আজ বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি কার্যকলাপের কঠোর সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এই দুর্নীতিবাজ সরকারকে না সরালে দেশ ও জনগণের কোনো কল্যাণ হবে না। এই সরকার সবচেয়ে বেশি এই দেশের জনগণকে ভয় পায়। কারণটা বলবো- ২৯ ডিসেম্বর বিজয়ের মাস ছিল। আমরা রোড ফর ডেমোক্রেসি ডেকেছিলাম। সারাদেশ থেকে জাতীয় পতাকা নিয়ে মানুষ আসবে। এটা দেশপ্রেমের একটা অংশ। এতে সরকার ভয় পেয়ে আমাকে দুই দিন গৃহবন্দি করে রেখেছে। অবরোধ করেছে। জনগণের সরকার হলে এটা করতে পারতো না। আমরা ক্ষমতায় থাকাকালে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা দেইনি।’
৫ জানুয়ারির নির্বাচেন জনগণ ভোট দেয়নি দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ‘অবিলম্বে নির্বাচন দেয়ার ব্যবস্থা করুন। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে। ৫ তারিখের নির্বাচন প্রমাণ করে দিয়েছে নির্দলীয় সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘১৫৩ আসনে কোনো ভোট হয়নি। জনগণের ভোট ছাড়াই তাদের এমপি বলা হচ্ছে। ১৪৭ আসনে ৫% এর কম ভোট পড়েছে। এদের জনপ্রতিনিধিত্ব বলবো কি করে? তাই নির্লজ্জ সরকারকে বলবো নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই করেন।’
সারাদেশে যে গুম, খুন হত্যা নির্যাতন চলছে এতে আওয়ামী লীগের লোকজন জড়িত রয়েছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘যৌথ অভিযানের নামে জনগণের ওপর অত্যাচার চলছে। গুম, খুন করা হচ্ছে। নির্বাচনের সময়ে ২২ জন নেতাকে গুম করা হয়েছে। এগুলো বন্ধ করুন। যৌথবাহিনীর অভিযানের নামে জনগণের ওপর নির্যাতন বন্ধ করুন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে না তারা আবারো প্রমাণ দিল।’ বর্তমান সরকার নতুন প্রজন্মের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সাংবাদিকদের কারাগারে নেয়ায় সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এজন্য সরকারের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অভিযোগ করে বলেছেন, বর্তমান সরকার অস্ত্রের জোরে ক্ষমতায় আছে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে যায়নি।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘জনগণ এ নির্বাচনকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাই জনগণকে ধন্যবাদ জানানোর জন্যই এখানে এসেছি। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হলো গায়ের জোরে ভোট করা যায় না। জনগণের সমর্থন লাগে। অস্ত্রের জোরে ক্ষমতায় থাকা যায় না।
একটি পত্রিকার কপি দেখিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, ভোটকেন্দ্রে জনগণ নয়, কুকুর বসে আছে।
এ সময় তিনি পত্রিকায় প্রকাশিত ভোটকেন্দ্রে অপেক্ষমাণ অপ্রাপ্তবয়স্কদের ছবি দেখিয়ে বলেন, ‘৮-১০ বছরের শিশুদের দিয়ে ভোট দেওয়ানো হয়েছে। যেহেতু ভোটার যায়নি, তাই তারা ভোট দিয়েছে।’
খালেদা জিয়া বলেন,‘১৫৩ আসনে ভোট হয়নি। জনগণের ভোট ছাড়াই এমপি বলা হচ্ছে তাদের। আর বাকিরা ৫ শতাংশেরও কম ভোট পেয়েছেন। তাই এই নির্লজ্জ সরকারকে বলবো অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুন।’