ফিটনেস সনদ পাওয়ার যোগ্যতা ছিল না এমভি মিরাজ-৪ লঞ্চটির। সাম্প্রতিক সময়ে লঞ্চটি আরও দু'বার দুর্ঘটনার কবলে পেড়ে। তবুও রহস্যজনক কারণে ফিটনেস সনদ দেওয়া হয়। লঞ্চটির ফিটনেস ত্রুটির কথা স্বাীকার করেছেন বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান ড. শামসুদ্দোহা খন্দকারও। গতকাল তিনি গণমাধ্যমকে এ প্রসঙ্গে বলেন, লঞ্চটির নিচের অংশ থেকে ওপরের অংশ বেশি প্রশস্ত ছিল। এ কারণে বাতাসে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে লঞ্চটি। যে কারণে দ্রুত পানিতে তলিয়েও যায়।
অভিযোগ উঠেছে, অর্থের বিনিময়ে সনদ দিয়েছিলেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। আর এ দুর্নীতির কারণেই শেষতক জীবন দিতে হলো অসংখ্য মানুষকে। স্বজন হারিয়ে পাগলপ্রায় নিহতদের পরিবারগুলো। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লঞ্চটির অবকাঠামোগত এসব ত্রুটি-বিচ্ছুতি দেখেও বার্ষিক সার্ভে (ফিটনেস) সনদ দেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাস্টারশিপ পরীক্ষা কমিটির প্রধান ও সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের চিফ নটিক্যাল সার্ভেয়ার (সিএনএস) কেএম জসিমউদ্দীন সরকার ও সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের ঢাকাস্থ সদরঘাট অফিসের ইঞ্জিনিয়ার অ্যান্ড শিপ সার্ভেয়ার মির্জা সাইফুর রহমান। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে এ লঞ্চটি আরও দু’বার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তারপরও কয়েক বছর ধরে ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চটিকে চলাচলের সুযোগ করে দিচ্ছে নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ।
অভিযোগ আছে, দুর্নীতি করে এভাবে চলাচলের অযোগ্য অসংখ্য নৌযানকে সনদ দিয়েছেন তারা। আর এসব লঞ্চই হয়তো ভবিষ্যতে আরেক ‘এমভি মিরাজ-৪ ট্র্যাজিডি’র মতো কোন দুর্ঘটনার জন্য অপেক্ষা করছে। ফের কোন নদীতে ভেসে উঠবে একের পর এক লাশ। তৎপর হয়ে উঠবে উদ্ধারকারীরা। স্বজনরা বুকফাটা কান্না নিয়ে ভীড় করবে পদ্মা, মেঘনা বা অন্য কোন নদীর তীরে। সরকার তদন্ত কমিটি গঠন করবে। ক'দিন মিডিয়া সরব থাকবে। ফের সব হিসেব কালের গর্ভে মিলিয়ে যাবে। নতুন করে আবার কোন দুর্ঘটনা খবরের অপেক্ষা করবে মানুষ।
এমভি মিরাজ-৪ দুর্ঘটনার মাত্র ১০ দিন আগে ৪ঠা মে পটুয়াখালীর গলাচিপায় রামদাবাদ নদীতে নিমজ্জিত হয় এমভি শাতিল-১। ওই দুর্ঘটনায় ২০ জনের লাশ উদ্ধার হয় এবং নিখোঁজ থাকেন অন্তত ১০ জন।