ধূমপান মুক্ত হচ্ছে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা। খুব শিগগিরই স্পিকারের দপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত একটি জরুরি নির্দেশনা জারি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিস্ট একটি সূত্র বলেছে, সংসদ ভবনে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদীয় কমিটিগুলোর অনেক অফিস, নানা শ্রেণীর কর্মকর্তাদের দফতর এবং সংবাদকর্মীদের মিডিয়া সেন্টারগুলোতে ব্যাপক হারে ধূমপান ও তামাকের ব্যবহার হয়। যে মহান সংসদে ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হয়েছিল সেই সংসদে দেদারছে ধূমপান শুধু অনৈতিকই নয়, আইন বিরোধীও। এ জন্য স্পিকার সংসদ ভবন এলাকাকে ধুমপানমুক্ত করতে চাইছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সাংবাদিক লাউঞ্জ এবং অন্য কয়েকটি মিডিয়া সেন্টারে শুধু সংবাদকর্মীরাই নয়, বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারাও এসে ধূমপান করেন। সংসদ চলাকালীন সংসদ অধিবেশন পরিদর্শনে যে সব বহিরাগত দর্শনার্থীরা আসেন তাদের অধিকাংশই ধূমপান করেন ক্যান্টিনে এবং দাফতরিক অফিসগুলোতে। ধূমপান করার কারণে নিকোটিন চেম্বারে পরিণত হয় জাতীয় সংসদ ভবনের বেশ কয়েকটি অফিস। এতে সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন নানা শ্রেনীর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, যথাযথভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় তামাকের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। এজন্য আইনের বেশ কিছু দুর্বলতাও রয়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলোতে ধূমপান নিষিদ্ধ করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।
স্পিকার বলেছেন, আইনটি যথোপযুক্ত করা দরকার। কী ধরনের নীতিমালা গ্রহণ এবং আইন প্রণয়ন করলে তামাক প্রতিরোধ সম্ভব সে বিষয়ে এমপিদের আসন্ন বাজেট অধিবেশনে দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা করারও আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে একটি কর্মশালায় তিনি প্রায় অর্ধশতাধিক সংসদ সদস্যকে তামাকের কুফল এবং আইনের দুর্বল দিকগুলোর ব্যাখ্যা দেন। এই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়েই তামাক প্রতিরোধে সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, তামাক সেবনের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে প্রচুর তথ্য থাকা প্রয়োজন। তামাক সেবন শুধু স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করে না- স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের উপরও অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে। জাতীয় অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩০ বছরের বেশি বয়স এমন বাংলাদেশীদের মধ্যে প্রতিবছর ১২ লাখ লোক তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারজনিত নানা রোগে মারা যায়। বিড়ি,সিগারেট, গুল, তামাক পাতা, জর্দ্দাসহ অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য ব্যহারের কারণে ক্যান্সার, হার্ট এ্যাটাক, ব্যঙ্কাইটিস, যক্ষ্মা, ফুসফুসের প্রদাহ, শাসনালীতে ক্ষতসহ আরো অনেক প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হন তামাক ব্যবহারকারীরা। প্রতিবছর শুধু তামাক ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশে ১১ হাজার কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়।