প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিরোধিতার কারণেই অনেকে সম্প্রচার নীতিমালার বিরোধিতা করছে। সবসময় সাংবাদিকদেরই দাবি ছিল একটা নীতিমালা হোক। আমরা সাংবাদিকদের দাবি পূরণ করেছি। একটা নীতিমালা করেছি। বিএনপি-জামায়াত এই নীতিমালার বিরোধিতা করছে। কিন্তু যারা এখন সম্প্রচার নীতিমালার বিরোধিতা করছেন, তারা ক্ষমতায় আসার পর এই নীতিমালা আরও কঠোর করবে।
আজ বুধবার দুপুরে গণভবনে দুঃস্থ ও দরিদ্র সাংবাদিকদের সহায়তা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সমালোচনা করবেন, করেন কিন্তু যে ডালে বসে আছেন, সেই ডালটি কেটে ফেলার চেষ্টা করবেন না। তাহলে ধপাস করে পড়ে যাবেন। আশা করি বুদ্ধিমানেরা এতোটুকুতেই বুঝতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যদি গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস না করি তাহলে বেসরকারি গণমাধ্যম খাতকে অনুমোদন দিলাম কেন? আমরাই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছি। আর সে কারণেই দেশের গণমাধ্যমগুলো স্বাধীনভাবে সংবাদ সম্প্রচার করতে পারছে। যে কোনো সংবাদ প্রচারের পূর্ণ স্বাধীনতা তাদের আছে। সাংবাদিকদেরকে মনে রাখতে হবে যে, স্বাধীনতা মানে আবার স্বেচ্ছাচারিতা নয়।
তিনি বলেন, সাংবাদিকরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তারা যেন আর নির্যাতনের শিকার না হয় এ জন্য এবং তাদের সহযোগিতা করার জন্যই ট্রাস্ট গঠন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির জন্য ওয়েজ বোর্ড গঠন করেছি। অবশ্য অনেকে ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন-ভাতা দিচ্ছে, আবার অনেকে দিচ্ছে না।
দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টকে সহযোগিতা করার জন্য সংবাদপত্র মালিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এজন্য সাংবাদিকদেরও উদ্যোগ নিতে হবে। সরকার তাতে সহযোগিতা করবে। কিন্তু পরনির্ভরশীল না থেকে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। একসময় হাওয়া ভবনের নির্দেশে সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। দক্ষিণ অঞ্চলে সাংবাদিকরা টিকতে পারতো না। কিন্তু আজকে সেই অবস্থা নেই। আজকে সাংবাদপত্র শিল্প হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। এতে সাংবাদিকরা সুফল পাবেন। আবার গণমাধ্যম মালিকরাও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আমদানিতে ছাড় পাবেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অষ্টম ওয়েজ বোর্ডের ঘোষণার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটি বাস্তবায়নের বিষয়টি তথ্য মন্ত্রণালয় দেখবে। পাশাপাশি চলচ্চিত্র উন্নয়নের জন্য সরকার চেষ্টা করছে। সামাজিক বিভিন্ন সাইট যেন দেশ ও সমাজের কোনো ক্ষতি করতে না পারে তার জন্য সতর্ক থাকতে হবে।
এ সময় তিনি বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, আন্দোলন করে জনগণকে রাজনৈতিক ভুলের মাশুল দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। বাংলাদেশ আজকে নানা বাধা পেরিয়ে উন্নয়নের পথে এগুচ্ছে। এখন বাংলাদেশ সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। কিন্তু এটা তাদের (বিএনপির) পছন্দ না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, এটাও তাদের পছন্দ না।
কিন্তু সব বাধা পেরিয়ে দেশ সাবলম্বী হচ্ছে এবং হবে। দেশকে আমরা সেই জায়গায় নিতে পারবো, সেই বিশ্বাস আমাদের আছে, যোগ করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।