একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেছেন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র চ্যালেঞ্জ করা রাষ্ট্রদ্রোহিতা। এ ঘোষণাপত্র চ্যালেঞ্জ করা মানে বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জ করা। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করা। এটাকে যখন চ্যালেঞ্জ করা হয় তখন আর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থাকে না, সেটি গৃহযুদ্ধে রূপান্তরিত হয়।
গতরাতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনে প্রচারিত এক সাক্ষাত্কারে মুক্তিযুদ্ধের উপ-প্রধান সেনাপতি এ কে খন্দকারের বই বিতর্ক প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে এর আগে খন্দকার সাহেবের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমি বলেছি, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র চ্যালেঞ্জ করা যায় না। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির একটি সেমিনারেও বলেছি, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র চ্যালেঞ্জ করার অর্থই হচ্ছে রাষ্ট্রদ্রোহিতা। সে পরিপ্রেক্ষিতে আমি মনে করি, এটি তার আত্মজীবনী হতে পারে। এখানে অনেক কল্পকাহিনী তিনি লিখতে পারেন। কিন্তু এভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র চ্যালেঞ্জ করা আমি সঠিক মনে করি না। আমি মনে করি, ঐতিহাসিক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের যে ইতিহাস নিয়ে আমরা কাজ করছি এই ইতিহাসে তার বইয়ের কোনো মূল্য নেই। এটাকে আত্মজীবনীমূলক কল্পকাহিনীরূপে মানুষ দেখবে।
৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সম্পর্কে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আমার পরিষ্কার মনে আছে। আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আমি ও মুনতাসির মামুন নিজ কানে ভাষণ শুনেছি। আমরা কেউ ‘জয় পাকিস্তান’ শুনিনি। বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ থেকে ‘জয় পাকিস্তানের’ কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এ ধ্বনির কোনো প্রশ্নই ওঠে না। তখন ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলা হতো। ’৭০ সাল থেকে জয়বাংলা শুনেছি। এটি একটি জনপ্রিয় স্লোগান ছিল। এটি নিয়ে কাহিনী চিত্র, ছবি, গান নির্মিত হয়েছে। জয়বাংলা মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি ছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ‘জয় পাকিস্তান’ কেন বলবেন? তিনি যদি বলতেন তেমন কিছু তবে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলতে হতো। আরেকটা আপত্তিকর বিষয় হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর প্রস্তুতির ব্যাপারে। এটা নিয়ে আমরা অনেক গবেষণা করেছি। বঙ্গবন্ধু প্রকাশ্যে এবং গোপনে রাজনৈতিকভাবে এবং সামরিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি কিভাবে নিয়েছিলেন তা খন্দকার সাহেবকে আমরা বলেছি। এ বিষয় নিয়ে এখন বিতর্ক তোলার অর্থই হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে তারেক জিয়া যেসব উক্তি করছেন তাদের হাতকে শক্তিশালী করা।