প্রকাশক-লেখক হত্যা ও হামলার প্রতিবাদে সারা দেশে গণজাগরণ মঞ্চের আধাবেলা হরতাল চলছে শান্তিপূর্ণভাবে। মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকেই শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন মঞ্চের কর্মীরা। তাদের অবস্থানের কারণে শাহবাগ মোড়ে যানবাহন চলছে না।
প্রতিবাদ সমাবেশ চলছে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটেও। ফলে পুরানা পল্টনেও রাস্তার এক পাশে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে হরতালের সমর্থনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক বন্ধ করে দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সকাল ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা প্রগতিশীল ছাত্রজোট, সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীরাসহ বিশ্ববিদ্যালয় গণজাগরণ মঞ্চের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেইট সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।
হরতালের শুরুতে প্রথম দুই ঘণ্টায় রাজধানীর রাস্তায় যানবাহন তুলনামূলক কম দেখা গেছে। এই হরতালের প্রেক্ষাপটে আগের দিনই জানানো হয়েছে, এদিন জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেটের (জেডিসি) সকালের পরীক্ষা হবে দুপুরে।
গত শনিবার শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যা এবং লালমাটিয়ায় শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে প্রকাশক আহমেদুর রশিদ টুটুলসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম করার প্রতিবাদে গত রবিবার ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এই হরতালের ঘোষণা দেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।
হরতালের সমর্থনে সোমবার সন্ধ্যায় শাহবাগে মশাল মিছিলের আগে ইমরান সাংবাদিকদের বলেন, ''উগ্রবাদীদের চিন্তার সঙ্গে যারাই দ্বিমত পোষণ করছেন তাদেরকেই হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। একে একে হত্যা করা হচ্ছে। এরই প্রতিবাদে আমরা দুইদিন ধরে কর্মসূচি পালন করে আসছি। যেহেতু সারা দেশের মানুষকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং তারা জানমালের নিরাপত্তা সংকটে ভুগছেন, তাই নিজেদের জায়গা থেকে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ হরতাল কর্মসূচি পালন করবেন বলে আশা করছি।''
২০১৩ সালে শাহবাগে গণজাগরণ আন্দোলন গড়ে ওঠার সূত্রপাত ঘটেছিল ব্লগার ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টদের একটি মানববন্ধন থেকে।
এরপর যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবি জানিয়ে আসা অনেক দল, সংগঠন এই আন্দোলনে যুক্ত হয়। শাহবাগ আন্দোলন শুরুর কয়েকদিনের মধ্যে গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এরপর একই কায়দায় হত্যা করা হয় আরও কয়েকজন ব্লগার ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্টকে, যারা সবাই গণজাগরণ আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/০৩ নভেম্বর ২০১৫/ এস আহমেদ