বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ক্রমশঃ আরও শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড় 'রোয়ানু' (ROANU)তে রূপ নিয়েছে। এটি বর্তমানে স্থির রয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে বৃহস্পতিবার রাতে আবহাওয়ার ৯ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম ব্যুরো ও বাগেরহাট প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় 'রোয়ানু' মোকাবেলার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও বাগেরহাটের সকল সরকারি ও আধা-সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। উপকূলীয় উপজেলাগুলোর লোকজনকে নিরাপদে সরে আসতে বেতারে প্রচার চালানোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়। একইসঙ্গে সিগন্যাল বাড়লে মাইকিং করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
এর আগে সমুদ্রবন্দরে এই সংকেত ছিল ২ নম্বর। সেটি নামিয়ে ৮ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে ৪ নম্বর করা হয়। সর্বশেষ বুলেটিনেও এই সতকর্তা সংকেত অব্যাহত রাখা হয়েছে।
রোয়ানুর কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে, যাতে তারা স্বল্প সময়ের নির্দেশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় 'রোয়ানু' কার্যত স্থির থেকে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে বলেও বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে।
এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়াবিদদের সমন্বয়ে গঠিত প্যানেলের তালিকা অনুযায়ী এই ঝড়ের নাম দেয়া হয়েছে 'রোয়ানু'। নামটি মালদ্বীপ প্রস্তাব করেছিল।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ