বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় 'রোয়ানু' ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
শনিবার দুপুরে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, রোয়ানু চট্টগ্রাম উপকূলের সন্দ্বীপ, হাতিয়া, কুতুবদিয়া, সীতাকুণ্ডু ও ফেনী উপকূল দিয়ে স্থলভাগে উঠে আসছে। উপকূলের কাছাকাছি আসার পর এ ঘূর্ণিঝড় দ্রুত স্থলভাগের দিকে এগোতে শুরু করে। ঝড়ের পুরো পরিধি স্থলভাগে উঠে আসতে বিকাল পেরিয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।
এর আগে, বরগুনা ও পটুয়াখালী অতিক্রম করে চট্টগ্রাম উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম জানান, শনিবার বেলা ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে রোয়ানু চট্টগ্রামে আঘাত হানে।
তিনি আরও জানান, রোয়ানু শ্রীলঙ্কা থেকে এ পর্যন্ত প্রচুর বৃষ্টি ঝরিয়ে এসেছে। বৃষ্টি হলে ঘূর্ণিঝড় এমনিতেই দুর্বল হয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। এই বেগ ২০০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার হলে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বেশি থাকত। তারপরও উপকূলীয় অঞ্চলে এলাকাবাসীকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পূর্বাভাস কর্মকর্তা আতিকুর রহমানও রোয়ানুর আঘাত হানার কথা নিশ্চিত করে বলেন, রোয়ানু চট্টগ্রামে আঘাত হেনেছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেক স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে শনিবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছিল, ঘূর্ণিঝড়টি শনিবার দুপুর বা বিকেল নাগাদ বরিশাল ও চট্টগ্রামের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এ অঞ্চলের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে চার-পাঁচ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
রোয়ানুর কারণে চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং এসব জেলার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় আসবে।
কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার এবং এর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বিডি-প্রতিদিন/২১ মে, ২০১৬/এস আহমেদ/মাহবুব