বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, জিএসপি’র কথা বলা হয়েছে। আমরা জিএসপি সুবিধার জন্য ১৬টি শর্ত পূরণ করেছি। বাকি থাকলে সেটাও পূরণ করবো। কিন্তু তারপরও সুবিধা ফেরৎ পাবার সিদ্ধান্তটি কি আসবে? আমরা জানতে চেয়েছি ব্যাপারটা রাজনৈতিক কিনা!
তবে যে সকল পণ্যে জিএসপি সুবিধা পেতাম তাতে জিএসপি বন্ধ হওয়ায় খুব একটা মেটার করে না বা কিছু যায় আসে না বলে জানান তিনি।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার সংসদের বৈঠকের প্রশ্নোত্তর পর্বে আব্দুর রহমানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে জিএসপি’র কোনো প্রভাব পড়ছে না :
আব্দুর রহমানের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যা রফতানি হয় তার ৯০ ভাগই হচ্ছে তৈরি পোশাক। তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে জিএসপি’র কোনো প্রভাব পড়ছে না। প্রভাব পড়ছে অন্য কিছু আইটেমের উপরে, যেটা খুব বেশি একটা মেটার করে না। আমার পূর্বসুরি তোফায়েল সাহেব অত্যন্ত দক্ষতার সাথে এ বিষয়ে চেষ্টা করেছেন। আমিও গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের হাই কমিশনারের সাথে কথা বলেছি। তারা আবারও সেই প্রশ্ন তুলেছিল। আমরা ১৬টা শর্ত পূরণ করেছি বা যেগুলো বাকি আছে সেটাও আমরা করব, কিন্তু তারপরেও কি সিদ্ধান্তটা আসবে? আমি জানতে চেয়েছি। আসলে ব্যাপারটা রাজনীতির কি না? যাই হোক আমরা কথা বার্তা চালাব।
চীন ও ভারতে আমদানি রফতানির ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে :
অসীম কুমার উকিলের (নেত্রকোনা-৩) সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মনশি বলেন, চীন ও ভারতে আমদানি রফতানির ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে। আবার ভারত ও চীনের বিশাল বাজারে ব্যাপক রফতানিরও সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ভারতে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের রফতানি বেড়েছে। চায়নাতেও তৈরি পোশাক ছাড়াও অন্যান্য পণ্য রফতানিযোগ্য পণ্য বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করি।
লিখিত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যুক্তারাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের সুবিধা এখনো পাওয়া যায়নি। তবে শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুবিধা লাভের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
টিকফা নিয়েও আলোচনা চলছে :
ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, তারা প্রশ্ন তুলেছে শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে, আমাদের সংসদে আইন আছে সেটাও হয়ে যাবে। আমি বিশ্বাস করি, আশাকরি জিএসপি’র ব্যাপারটা আমরা শর্টআউট করতে পারব। টিকফা নিয়েও আলোচনা চলছে। বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম টিকফা কাউন্সিল চুক্তির অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশের সুবিধা লাভের নিমিত্ত প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার রফতানি করি :
একই প্রশ্নকর্তার উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আমরা প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার রফতানি করি। আর ওদের ওখান থেকে আসে ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। আমরা অনেক বেশি রফতানি করি, কাজেই ওদেরও অনেক কথা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ট্যাক্স নিচ্ছে কথাটি সত্য। যদি শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতাম তাহলে ভাল হত। কিন্তু তারা তো দিচ্ছে না, চেষ্টা করছি।
১২১ দেশে কৃষি পণ্য রফতানি বজলুল হক হারুনের (ঝালকাঠি-১) প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বিশ্বের ১২১টি দেশে কৃষি পণ্য রফতানি হয়। কৃষিপণ্য রফতানি অধিকহারে বাড়াতে সরকার নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। সেই লক্ষ্যে বিদ্যমান রফতানি নীতিতে কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রাপ্ত খাত হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম