প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য, নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধের আহবান জানিয়ে প্রখ্যাত কথাশিল্পী সেলিনা হোসেন বলেছেন, প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুরা এভাবে প্রতিকারহীন ভাবে নির্যতীত হতে পারে না। আজকে উপস্থাপিত প্রবন্ধে নির্যাতন ও বঞ্চনার কেইস স্টাডিগুলো আমার পঞ্চান্ন বছরের লেখনী সত্ত্বাকেও প্রভাবিত করেছে। আমরা আর এভাবে বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে ডুবে থাকতে চাই না। আমি আমার লেখনীর মাধ্যমে সমাজে প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুদের প্রতি নির্যাতন, সহিংসতা ও বৈষম্যের কথা তুলে ধরব। আসুন আমরা সবাই মিলে প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য, নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধে সোচ্চার হই।
বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে প্রতিবন্ধী নারীদের জাতীয় পরিষদ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি নাসিমা আক্তার। ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ এর বাস্তবায়ন ও প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুর বর্তমান অবস্থা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদা আক্তার।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী ও ইন-কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর মো. রেজাউল করিম সিদ্দিকী।
সেলিনা হোসেন আরও বলেন, একাত্তরে যেমন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের একটি ভাষণে গোটা জাতি মহান মুক্তিযুদ্ধের জন্য বার্তা পেয়ে গিয়েছিল, ঠিক তেমনিভাবে প্রতিবন্ধী ও শিশুদের অধিকার বাস্তবায়নে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের বার্তা সমাজের সকল স্তরের মানুষদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এসময় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কথাগুলো সকলের নিকট পৌঁছে দেয়ার জন্য তিনি প্রিন্ট ও বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াগুলোকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন। প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুর অধিকার আদায়ে তাদের পাশে থাকার জন্য দেশের সর্বস্তরের মানুষদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, সমাজে নারী ও শিশুরা যেমন বঞ্চিত তেমনিভাবে প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুরা আরও বেশি অসহায় ও অবহেলিত। কারণ তারা নিজেদের উপর নির্যাতনের যথাযথ প্রতিবাদ করতে পারে না। লিগ্যাল এইড ক্যাম্পে আগত প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুদের বরাত দিয়ে জানানো হয় অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে অধিকহারে প্রতিবন্ধী নারীগণ যৌতুক, স্বামী কর্তৃক নির্যাতন, উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিতকরা, কর্মস্থলে বৈষম্য ও প্রতারণামূলক বিবাহের শিকার হচ্ছেন। এসব অপরাধের বিরুদ্ধে শক্তিশালী আইন থাকলেও সেই আইনের সুফল তারা পাচ্ছেন না। ফলে বিচারহীনতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে এই সকল অপরাধ প্রতিনিয়ত তীব্রতর হচ্ছে।
সংগঠনের সভাপতি নাসিমা আক্তার বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হলেই প্রতিবন্ধী নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতা, নির্যাতন ও বৈষম্য দূর হবে। এসময় সংগঠনের পক্ষ থেকে নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতা, নির্যাতন বন্ধে পাঁচ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন