শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বর্তমানে দেশে সরকার অনুমোদিত ১১৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৯৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ভালো। তবে কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখার স্বার্থে তথা সার্টিফিকেট বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য কমিশন থেকে নিয়মিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া যে সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সার্টিফিকেট বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাদের মধ্যে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। একটি বিশ্ববিদ্যালয় (দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়) আদালতের রায় অনুযায়ী সরকার কর্তৃক বন্ধ করা হয়েছে।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার একাদশ জাতীয় সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে নাছিমুল আলম চৌধুরীর (কুমিল্লা-৮) লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখার স্বার্থে তথা সার্টিফিকেট বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে নিয়মিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ মনিটরিং করা হচ্ছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি প্রোগ্রামের নির্দিষ্ট সংখ্যক আসনের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি এবং প্রতিটি প্রোগ্রামের জন্য মোট ক্রেডিট আওয়ার সেমিস্টার পূর্ব থেকে নির্ধারিত করার মাধ্যমে শিক্ষার নামে সার্টিফিকেট বাণিজ্য বহুলাংশে বন্ধ হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি অসাধু চক্রের যোগসাজশে পরিচালিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ বন্ধ করা হয়েছে এবং অনুমোদিত ক্যাম্পাসসমূহ বন্ধের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধ করা হয়েছে। প্রত্যেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী অভ্যন্তরীণগুণগত মান নিশ্চিতকরণ সেল বা ইউনিট গঠন করা হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ভর্তির যোগ্যতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ও অনুমোদিত প্রোগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশনের ওয়েবসাইটে নিয়মিত আপলোড করা হচ্ছে।
দেশে স্বাক্ষরতার হার ৭৩.৯ শতাংশ : মামুনুর রশীদ কিরনের (নোয়াখালী-৩) লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানান, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী (২০১৮) দেশে স্বাক্ষরতার হার ৭৩.৯ শতাংশ যা ২০১৫ সালে ছিল ৫২.৮ শতাংশ। প্রথমিক শিক্ষা সমাপনীতে পাসের পর ২০১০ সালে ছিল ৯২.৩৪ শতাংশ যা ২০১৮ সালে ৯৭.৫৯ শতাংশ। দেশের সাক্ষতার হার বৃদ্ধির জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
মুজিব বর্ষে ছাত্রছাত্রীদের ড্রেস, জুতা, ব্যাগ : সরকারি দলের সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল যাওয়ার আনন্দকে আরও জোরালোকরণের জন্য প্রতিটি স্কুল ছাত্র-ছাত্রীকে বছরের শুরুতে শিক্ষা উপকরণ (ড্রেস, জুতা, ব্যাগ) কেনার জন্য প্রাথমিকভাবে ৫০০ টাকা করে প্রদানের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও জানান, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের উপবৃত্তির পাশাপাশি ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে শিক্ষা সহায়ক উপকরণ দেওয়ার জন্য প্রতি বছর শুরুতে এককালীন ৫০০ টাকা দেওয়া হবে। প্রকল্পটির মূল্য লক্ষ্য হল দারিদ্র-বিমোচন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ ক্রয়ের জন্য শিক্ষা সহায়তা প্রদান করা, যেন তারা সন্তুষ্টি এবং আনন্দের সাথে স্কুলে যেতে পারে।
৩ হাজার ৭১৬টি শূন্যপদে পিএসসি’র মাধ্যমে নিয়োগ : সরকারি দলের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের সরাসরি নিয়োগযোগ্য ৩৫ শতাংশ ৩ হাজার ৭১৬টি শূন্যপদে ৩৭তম বিসিএস হতে পিএসসি’র মাধ্যমে নিয়োগের জন্য পিএসসি’র সুপারিশ পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তাছাড়া প্রধান শিক্ষকের পদোন্নতিযোগ্য শূন্য পদে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে হতে পদোন্নতি/চলতি দায়িত্ব প্রদানের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম