জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ২০২২ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সাহিত্যে অবদানের জন্য মরহুম আমির হামজাকে মনোনীত করা হয়।
মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মনোনীতদের তালিকা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
তবে সাহিত্যে অবদানের জন্য আমির হামজাকে মনোনীত করায় সমালোচনার ঝড় তৈরি হয়েছে। সাহিত্যে তার অবদান কতটুকু, তিনি একজন উপ-সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তার বাবা এবং একজন খুনের আসামি বলেও নেটিজেনরা সমালোচনার ঝড় তুলেছেন। এই পরিস্থিতিতে স্বাধীনতা পুরস্কার মনোনয়ন কমিটি আমির হামজার বিষয়ে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বলে ইঙ্গিত এসেছে।
কমিটির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বুধবার রাতে বলেন, যেসব অভিযোগ আসছে আমরা সেগুলো দেখবো।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখার একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে স্বাধীনতা পুরস্কার মনোনয়ন কমিটি নাম চূড়ান্ত করেছে। তবে যে সমালোচনা তৈরি হয়েছে তা ভুল শুধরে নিতে সহজ হবে বলে মন্তব্য করেছেন ওই কর্মকর্তা।
স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েও তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার নজির এরআগেও দেখা গেছে। সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০০০ সালে একজনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল।
ওই বছর সাহিত্যে রইজ উদদ্দিনকে মনোনয়ন দেওয়ায় বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা আসার মধ্যে তালিকা থেকে নাম বাদ দিয়ে নতুন তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সমালোচনকরা তার কর্ম ও সাহিত্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা সমালোচনা করে আসছিলেন।
স্বাধীনতা পুরস্কার দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় বেসামরিক পুরস্কার। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য বর্তমানে স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক, বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার, বেগম রোকেয়া পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার দিয়ে থাকে সরকার।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রদত্ত বেসামরিক সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার হলো স্বাধীনতা পদক। অনন্য সব পুরস্কারের সঙ্গে ২০২১ সাল থেকে স্বাধীনতা পুরস্কার অর্থের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ওই বছরের ২১ নভেম্বর রাষ্ট্রীয় বা জাতীয় পুরস্কারের অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করে সংশোধিত ‘জাতীয় পুরস্কার/পদক সংক্রান্ত নির্দেশাবলী’ প্রকাশ করে।
সরকারের এই নির্দেশনা অনুযায়ী, স্বাধীনতা পুরস্কারের ক্ষেত্রে প্রত্যেক ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হচ্ছে। আগে দেওয়া হতো ৩ লাখ টাকা।
পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পাবেন ১৮ ক্যারেট মানের পঞ্চাশ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র। -বাংলানিউজের সৌজন্যে
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত