প্রস্তাবিত বাজেটকে প্রতারণামূলক দুর্নীতিবান্ধব বলে মন্তব্য করেছে এবি পার্টি (আমার বাংলাদেশ পার্টি)। আজ শুক্রবার বিকাল ৪টায় এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক প্রতিবাদ সভায় দলটি এই মন্তব্য করে। সেইসঙ্গে এই বাজেটকে তারা প্রত্যাখ্যান করেছে।
পার্টির আহ্বায়ক ও সাবেক সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, অর্থ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম এফসিএ, দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা ও ঢাকা মহানগর সদস্য সচিব আনোয়ার সাদাত টুটুল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, শিক্ষা খাতে এই সরকারের কোনো মনোযোগ নেই। তারা উন্নয়ন বলতে বোঝায় কিছু ব্রিজ আর ফ্লাইওভার। কারণ, এগুলোর মাধ্যমে তাদের লুটের সুযোগ অবারিত হয়।’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই বাজেট প্রস্তবনাকে আমরা রিজেক্ট করি। কিন্তু আমাদের রিজেক্টকে হয়তো তারা আমলে নেবে না। কারণ, তারা সংঘবদ্ধ লুটেরা দল।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থাকে আজ ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। পদ্মা সেতু নিয়ে যা শুরু হয়েছে তা নিছক পাগলামি ছাড়া আর কিছু না। পৃথিবীর কোথাও এরকম পাগলামি হয় না।’
ড. দিলারা চৌধুরী আরও বলেন, ‘বৃটিশ আমলে আলোড়ন সৃষ্টিকারী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ তৈরি হলেও ইংরেজরা এত পাগলালি করেনাই।’ আজ বুদ্ধিজীবী হিসেবে যারা পরিচিত তাদের তিনি স্বার্থজীবী আখ্যায়িত করে বলেন, ‘রাষ্ট্র আজ বিপন্ন। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি শংকিত। যে সমাজের মেরুদণ্ড নেই সে সমাজ নিয়ে আমি গভীরভাবে চিন্তিত। আশা করব, তরুণরা এই চিন্তা দূর করে দেবে। আমরা তাকিয়ে আছি এবি পার্টির তারুণ্যনির্ভর নেতৃত্বের দিকে। এই নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর মুক্তি একটি তারুণ্যনির্ভর নেতৃত্বের হাত দিয়ে হোক, এই প্রত্যাশা করি।’
সভাপতির বক্তব্যে সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ‘এই দুর্নীতিবান্ধব বাজেট আমরা প্রত্যাখান করছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জননিরাপত্তা বিশেষ করে অগ্নিনিরোধক যন্ত্রপাতি কেনার জন্য বিশেষ বাজেট বরাদ্দের দাবি করছি।’
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, ‘একটি অবৈধ সরকার জনবান্ধব বাজেট দিতে পারবে না। কারণ জনগণের কল্যাণ তাদের মূখ্য নয়। তাই তারা আওয়ামীবান্ধব বাজেট দিয়েছে।’
ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘একটি অবাস্তব, কল্পনানির্ভর বাজেট পেশ করেছে সরকার। যেখানে রাজস্ব আয়, বৈদেশিক ঋণ কিংবা ব্যয়ের কোনো স্বচ্ছতা নেই। উন্নয়নের গল্পের নামে লুটের ইতিহাস সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
আমিনুল ইসলাম এফসিএ বলেন, ‘সরকার ব্যাংক থেকে অনবরত ঋণ নিয়ে বাজেট বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যেই দশ ব্যাংকে সাতাশ হাজার কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি রয়েছে। ডলারের দাম বাড়ছে মানেই আমদানি ব্যয় বাড়বে। যার ফলে সব জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। সরকার যত কথাই বলুক দেশ সংকটের দিকে যাচ্ছে, যা ঠেকাতে হলে আমাদের সঠিক রাজনৈতিক ভূমিকা রাখতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সহকারী সদস্য সচিব শাহ আব্দুর রহমান, এম ইলিয়াস আলী, মো. আক্তারুজ্জামান, আব্দুল লতিফ মাস্টার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার রফিক, সুলতানা রাজিয়া, মিনহজুল আবেদীন শরীফ, যুবনেতা তফাজ্জল হোসেন রমিজ, সাইফুল মির্জা, কামাল হোসেন, গাজী নাসির, শাহজাহান ব্যাপারী, সেলিম খান, শীলা আক্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, আব্দুল হালিম নান্নু, জেসমিন আক্তার মুক্তাসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ