আওয়ামী লীগ এখন জনগণের কাছে ভয়াবহ আতঙ্কের নাম বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এখন দুর্নীতির জয়জয়কার, রাজরোষে বিরোধী মত ও ব্যক্তিরা কারাগারে, নারকীয় উল্লাসে চলছে গুম-খুন-ক্রসফায়ার, ক্ষমতাসীনদের আস্কারায় পৈশাচিক আনন্দে নারী-শিশু নির্যাতনের হিড়িক চলছে, বিচার বিভাগকে করা হয়েছে সরকারের হাতের খেলনা, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে শুধুমাত্র সরকার ও সরকারপ্রধানের নিজস্ব বরকন্দজে পরিণত করা হয়েছে।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা এবিএম মোশাররফ, ভিপি জয়নাল আবেদীন, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রিন্স বলেন, দেশে শান্তিবিনাশী সমাজবিরোধীদের দাপট বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ এরা সরকারী দলের লোক। তবে চলমান দুঃশাসনে জনগণের মধ্যে এখন ক্রোধের আগুন দাউদাউ করে জ্বলছে। আর এটি ইতিহাসে প্রমাণিত যে, অবৈধ শাসনের অবসান ঘটাতে জনগণের আন্দোলন ও প্রতিজ্ঞা কখনোই নিষ্ফল হয়নি। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী নেতামন্ত্রীরা মাঝে মাঝে দুঃস্বপ্ন দেখে লাফ দিয়ে উঠে এবং আবোলতাবোল বকতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যই হচ্ছে গণতন্ত্র ও জনগণের সাথে প্রতারণা করা। আমি দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই-জনগণের কাছে শাক দিয়ে মাছ ঢেকে লাভ নেই। সরকার নিজের গর্ত নিজেই খুঁড়ছে। এই সরকার বেশিদিন টিকে থাকবে না। পৃথিবীতে কোন ফ্যাসিবাদ টিকে থাকেনি। এই নির্দয় ফ্যাসিবাদী সরকারও টিকবে না। জবরদস্তি করে জনগণের ঘাড়ে চেপে বসে থাকার দিন শেষ হবে অচিরেই।
তিনি বলেন, আওয়ামী মন্ত্রী ও নেতারা বলছেন-বিএনপি নাকি রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করেছে, বিদেশীদের কাছে দ্বারস্থ হচ্ছে। আওয়ামী নেতাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- বিএনপিতো গণবিরোধী অবৈধ সরকারের পতনের জন্য প্রশস্ত রাজপথেই আন্দোলন করছে। ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মাধ্যমে রাজোচিত জীবন নির্বাহ যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্যই আওয়ামী নেতামন্ত্রীরা নিশিরাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় আছে। ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস ও প্রশাসনকে কব্জায় নিয়ে ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণকে দুঃসহ জীবনযাপনে বাধ্য করে অবৈধভাবে ক্ষমতা ধরে রেখেছে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এখন জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর শান্তিপূর্ণ যেকোন কর্মসূচিতে হামলা ও বেপরোয়া গণগ্রেফতার চালানো হচ্ছে। আওয়ামী অবৈধ সরকার নিজেদের ক্ষমতাকে আবারো বেআইনী পন্থায় আঁকড়ে রাখতে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতারের পুরনো খেলায় মেতে উঠেছে। অবৈধ আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর এই ধরণের ন্যাক্কাজনক আচরণের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, সারাদেশ থেকে গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানাচ্ছি। হামলায় আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করছি। একই সাথে মিথ্যা ও গায়েবী মামলা প্রত্যাহারসহ হয়রানী বন্ধের জোর আহবান জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী দুই মাসের অধিকাল কারাগারে ভীষণ অসুস্থ। তাকে বিশেষায়িত কোন হাসপাতালে সুচিকিৎসা প্রদানের জন্য আমাদের দাবি উপেক্ষা করে সরকার তার প্রতি অমানবিক আচরণ করছে। আমরা আবারো রিজভীকে অবিলম্বে কোন বিশেষায়িত হাসপাতালে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা প্রদান করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর আহ্বান জানাচ্ছি। অবিলম্বে এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ