ভূত তাড়াতে তাবিজ সেই কারখানায়

আশুলিয়ায় নরসিংহপুরে ডেকো ডিজাইন লিমিটেড কারখানার পানি পান করে অর্ধশতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তবে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বললে তারা সবাই ভূত আতঙ্কে অসুস্থের কথা বলেন। এরপর থেকে দুই দিনে কর্তৃপক্ষ ভূত তাড়াতে কারখানার ভিতরে ঘটিয়েছে নানা কাণ্ড। এমনকি গতকাল সকাল থেকে কারখানায় আয়োজন করা হয়েছে দোয়া মাহফিল। স্থানীয় ২৭টি মসজিদের ইমাম ভূত তাড়ানোর কাজে অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন ফকির দিয়ে কারখানার সীমানা প্রাচীরের চারপাশে সরিষা ও সোনা-রুপার পানি ছিটানো হয়। কারখানা গেটে ঝুলানো হয়েছে তাবিজ। জানা গেছে, কারখানায় প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক কাজ করেন। বৃহস্পতিবার কারখানার ভিতর টয়লেট থেকে বের হয়ে পানি পান করার পরই কয়েকজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর শনিবার দুপুরে খাবার খাওয়ার পর পানি পান ও টয়লেট থেকে বেরিয়ে আবারও অর্ধশতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকেই ওই কারখানার শ্রমিকদের ভিতরে ভূত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ ভূত তাড়ানোর জন্য শুরু করে নানা কাণ্ড। গতকাল দুপুরে কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, ভূত তাড়ানোর জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে কবিরাজ ও ফকির নিয়ে আসা হয়েছে। সীমানা প্রাচীরের চারপাশে সরিষা ও রুপা-সোনার পানি ছিটানো হয়। দুপুরের দিকে ভূত তাড়িয়ে কারখানার মূল ফটকসহ প্রতিটি গেটের সামনে ঝুলানো হয় প্রায় ২০টি তাবিজ। কারখানার ভিতরে আয়োজন করা হয় এক দোয়া মাহফিলের। এতে প্রায় ২৭ জন ইমাম অংশ নেয়। স্থানীয় মসজিদের হাফেজ নুরুল আমিন বলেন, জিন, ভূত-পেত্নির কারণে শ্রমিকরা তিন দিন ধরে কাজে যোগ দিতে পারছে না। এ কারণেই ভূত তাড়ানোর কাজ ও দোয়া মাহফিরের আয়োজন করা হয়। মিরপুর থেকে আসা নুরুল আহসান ভুঁইয়া নামের এক ফকির বলেন, কারখানায় জিন ও ভূত রয়েছে। এ জন্য ভূত তাড়াতে সরিষা, সোনা-রুপার পানি ছিটানো হয়। এ ছাড়াও কারখানার বিভিন্ন গেটের সামনে তাবিজ ঝুলানো হয়েছে। যাতে ভূত ও জিন দ্রুত পালিয়ে যায়। নাসিমা, ফাহিমা আক্তার ও শাহিদা বেগম বলেন, এক সপ্তাহ যাবৎ শ্রমিকরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ জন্যই চারপাশে ঝুলানো হয়েছে তাবিজ। এদিকে শ্রমিক অসুস্থ হওয়ার বিষয়কে কেন্দ্র করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কারখানার পানি সংগ্রহ করে মহাখালী কলেরা হাসপাতালের রোগতত্ত্ব বিভাগে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আমজাদুল হক বলেন, ভূত বলে কিছু নেই।