রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও এমপি এনামুল হককে (রাজশাহী-৪) সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির একাংশের নেতারা। তারা বলেছেন, এনামুল হকের সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের দূরত্বের সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় ‘বাঁচাও বাগমারা, হটাও এনামুল’ স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে সমাবেশস্থল। মঙ্গলবার তৃণমূল আওয়ামী লীগের ব্যানারে বাগমারা উপজেলার হাটগাঙ্গোপাড়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জাতীয় শোক ও গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। দলীয় কর্মীরা বলেন, শোক সমাবেশ হিসেবে প্রচার করা হলেও এটি ছিল মূলত এমপি এনামুল হক-বিরোধীদের সমাবেশ। গত ১৫ আগস্ট একই স্থানে এমপি এনামুল হক শোকসভার আয়োজন করেছিলেন।
ওই সভায় এমপি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবারের এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সভায় উপজেলার বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী যোগ দেন।
সভায় রাজশাহী-৪ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী চারজন উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও মানবসম্পদ উপকমিটির সদস্য পিএম সফিকুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাকিরুল ইসলাম সান্টু, তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন এতে সভাপতিত্ব করেন। ইব্রাহিমও এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী।
আয়োজকরা বলেন, বিকাল ৪টার মধ্যে সমাবেশস্থল কানায় কানায় ভরে যায়। বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা মাঠে আসেন। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলফোর রহমান, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান, বাগমারা উপজেলার সাবেক সভাপতি আবদুস সোবহান চৌধুরী, তাহেরপুর পৌরসভার সভাপতি আবু বাক্কার মনছুর মৃধা, গোয়ালকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, এনামুল হক টানা তিনবার এমপি হিসেবে ক্ষমতায় থাকাকালে দলীয় নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন করেননি। দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে জামায়াত-বিএনপি ঘরানার লোকজন নিয়ে চলাচল করেন। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি ত্যাগী নেতাদের মনোনয়ন দেওয়ার ব্যবস্থা না করে টাকার বিনিময়ে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিজের স্বজন ও অনুসারীদের পরিচালনা কমিটির সভাপতি করে কোটি কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন।
বক্তারা আগামী নির্বাচনে বর্তমান এমপি এনামুল হককে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানান। তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করার অঙ্গীকার করেন।