সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এবং তার স্ত্রী রুকমিলা জামানের বিরুদ্ধে প্রায় ১২০ কোটি টাকা ঘুষ আদায় ও আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে তিনটি মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সংস্থাটির উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান। এদিকে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুকমিলা জামানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আদেশ দিয়েছেন আদালত। অনুমোদিত মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ইউসিবি পিএলসির আগ্রাবাদ শাখার গ্রাহক এইচ এম শিপ ব্রেকিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছ থেকে ৫৫ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার প্রমাণ মিলেছে।
ঘুষ নেওয়ার আগে সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রী ক্ষমতার অপব্যবহার করে এইচ এম শিপ ব্রেকিং ইন্ডাস্ট্রিজের হিসাব নম্বরে ২০১৯ সালের ১৮ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ৩৫ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ করান। এ ছাড়া একই আবেদনের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয় ধাপে আরও ২০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ করা হয়। এরপর বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন আরামিট থাই অ্যালুমিনিয়ামের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। এর মধ্যে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ৫ কোটি, ২৪ ফেব্রুয়ারি ৫ কোটি, ২৫ ফেব্রুয়ারি ৫ কোটি, ২৬ ফেব্রুয়ারি ৫ কোটি, ২৭ ফেব্রুয়ারি ৫ কোটি করে দুই চেকে ১০ কোটি এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি ৫ কোটি টাকাসহ মোট ৫৫ কোটি টাকা নেওয়ার প্রমাণ মিলেছে নথিপত্রে। ওয়াল মার্টের কাছ থেকে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর কর্মচারী মো. আবদুল আজিজের নামে ইউসিবির সদরঘাট শাখায় খোলা ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং নামের প্রতিষ্ঠানের হিসাবে ৫ কোটি টাকা জমা করা হয়। তবে এর আগে ২০২১ সালের ২৪ জানুয়ারি ইউসিবির জুবিলী শাখার গ্রাহক ওয়াল মার্ট লিমিটেডের এমডি সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম ব্যাংকটি থেকে ২০ কোটি টাকা ঋণের আবেদন করেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি ওয়াল মার্টের হিসাবে ঋণের টাকা জমা করা হয়। এদিকে ইউসিবি পিএলসির ফরেন এক্সচেঞ্জ শাখার গ্রাহক বেস্ট সার্ভিসের কাছ থেকে ৬০ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার প্রমাণ মিলেছে নথিপত্রে। ঘুষ নেওয়ার আগে বেস্ট সার্ভিসের হিসাবে ২০২২ সালের ১৬ থেকে ২০ জুনের মধ্যে ৬০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়। এরপর সেই টাকা সাইফুজ্জামানের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন হিসাবে পাঠানো হয়। এর মধ্যে ১৬ জুন সাইফুজ্জামানের কর্মচারীর মাধ্যমে বেস্ট সার্ভিসের হিসাব থেকে ৫ কোটি টাকা নগদে উত্তোলন করা হয়। এ ছাড়া ২১ জুন নগদে ইউসিবির নিকুঞ্জ শাখা থেকে ২ কোটি করে দুটি ও ১ কোটি করে একটি চেকে মোট ৫ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়। বাকি ৫০ কোটি টাকা ২২ জুন ২০২২ থেকে ৬ জুলাই ২০২২-এর মধ্যে ২১টি ট্রান্সজেকশনে সাইফুজ্জামানের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন হিসাবে পাঠানো হয়।