প্রবীণ সাংবাদিক ও কলামিস্ট আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর একাডেমিক বক্তব্যের ভুল ব্যাখা প্রদানের মাধ্যমে দেশ ও প্রবাসে যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটানোর পাঁয়তারা চলছে তার সমালোচনা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের সামিল নির্দয় অপপ্রচার থেকে সংশ্লিষ্টদের বিরত হবার আহ্বানে গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার প্রতিনিধিত্বকারী ৩৮ জন প্রবাসী এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিদাতাদের মধ্যে একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি শহীদ কাদরি, একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যাভিনেতা জামালউদ্দিন হোসেন, নিউজার্সির প্লেইন্সবরো টাউনশিপের নির্বাচিত কাউন্সিলম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরন্নবী, যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক ড. এম এ বাতেন, প্রবীণ সাংবদিক সৈয়দ মুহম্মদ উল্লাহ, বিজ্ঞানী ড. জিনাত নবী, ড. নাহিদ বানু, অধ্যাপক ড. সৈয়দ হাসান মামুন, কলামিস্ট বেলাল বেগ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নূরনবী, সাপ্তাহিক বাঙালির সম্পাদক কৌশিক আহমেদ, সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান, চলচ্চিত্র পরিচালক কবির আনোয়ার, চিকিৎসক ড. ওয়ালেদ চৌধুরী, কম্পিউটার বিজ্ঞানী ড. মুহম্মদ আব্দুল্লাহ, অধ্যাপক ড. মুশতাক এলাহী, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সউদ চৌধরী, ঝর্ণা চৌধুরী, সাংবাদিক শরিফ শাহাবউদ্দিন, নিনি ওয়াহেদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক লুৎফুন্নাহার লতা, কবি ও শিক্ষক নাজনীন সাইমন, অভিনেত্রী রওশন আরা হোসেন, ব্যবসায়ী শরাফ সরকার এবং জাকারিয়া চৌধুরী, ব্যবসায়ী ও মুক্তিযোদ্ধা তাফাজ্জল করিম, কণ্ঠশিল্পী শহীদ হাসান, তাহমিনা শহীদ, বিজ্ঞানী ড. আশরাফুজ্জামান, আইনজীবী মোর্শেদা জামান প্রমুখ।
যুক্ত বিবৃতিতে তারা বলেছেন, ‘৩ জুলাই বাংলাদেশ মিশনে আমাদের মধ্যে অনেকেই ছিলাম। গাফ্ফার চৌধুরীর একাডেমিক বক্তব্য আমরা শুনেছি। তিনি কখনোই আল্লাহ তায়ালা এবং আমাদের প্রিয়নবীর অমর্যাদা হয় এমন কোন কথা বলেননি। এতদসত্ত্বেও চিহ্নিত একটি মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে যে, গাফ্ফার চৌধুরী নাকি ইসলাম ধর্ম এবং হযরত মুহম্মদ (স.) সম্পর্কে কটূক্তি করেছেন। এ ধরনের অপপ্রচারের মধ্য দিয়ে ওই মহলটি ধর্মপ্রাণ মানুষদের ক্ষেপিয়ে তোলার জঘন্য প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধর্মীয় চরমপন্থীরা সারাবিশ্বেই নানা অপকর্মে লিপ্ত, এমনকি তারা স্বধর্মীয় লোকদেরকে হত্যা করতেও পিছপা হচ্ছে না। আইএসআইএস এবং বোকো হারামের মত নৃশংসতায় পারদর্শী এরা। ধর্মের নামে এরা সবকিছু করছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আমরা বাংলাদেশি হিসেবে এ শ্রেণির লোকদের জঘন্য কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জ্ঞাত রয়েছি। এরা এবং এদের পূর্বসূরিরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্মের দোহাই দিয়ে ৩০ লাখ বাঙালি হত্যা এবং দু’লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানী করেছে। একাত্তরের সে সব হায়েনার বিচার চলছে এখন বাংলাদেশ। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের পক্ষে বিশ্বব্যাপী জনমত সোচ্চার করতে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর বলিষ্ঠ ভূমিকায় আগে থেকেই ক্ষেপে ছিল ওই মহলটি। লন্ডন থেকে ৮১ বছর বয়সী আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী নিউইয়র্কে আসায় ওই দুষ্ট চক্রটি সুযোগ পেয়েছে তার বিরুদ্ধে অযথা মাঠে নামার। বিবৃতিতে, এ ধরনের ধর্মীয় উন্মাদনায় লিপ্তদের যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বানও জানানো হয়েছে। কারণ ধর্মের দোহাই দিয়ে মিথ্যাচার করে শান্তিপ্রিয় কমিউনিটিতে অস্থিরতা সৃষ্টির কোন সুযোগ আমেরিকার আইনে নেই। বিবৃতিতে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতি দ্ব্যর্থহীন সমর্থন জানিয়ে বলা হয়েছে, আমরা এহেন অপতৎপরতার নিন্দা জানাচ্ছি এবং সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টাকারীদের কঠোর হাতে দমনের আহ্বান জানাচ্ছি।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৮ জুলাই, ২০১৫/ রশিদা