১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম গণ আদালত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে যে আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন, সেই আন্দোলনের মাধ্যমে সঞ্চিত সাহস নিয়েই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করতে পেরেছিলেন। এই বিচার শুধু শুরুই নয়, বিচারের রায় শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড একে একে কার্যকরের মাধ্যমে নির্মূল কমিটির দীর্ঘ ২৪ বছরের আন্দোলন সফলতার দ্বারপ্রান্তেও নিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ২৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের যুক্তরাজ্য শাখা আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।
গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেলে পূর্ব লন্ডনের মন্টিফিউরি সেন্টারে ব্রিটেনে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম শীর্ষ সংগঠক সুলতান শরীফ, বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষে ফার্স্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম কবির, যুক্তরাজ্য নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসহাক কাজল, সহ-সভাপতি সৈয়দ এনামুল ইসলাম ও সহ-সাধারণ সম্পাদক জামাল খান নির্মূল কমিটি ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কেক কেটে নির্মূল কমিটির ২৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করেন।
এর আগে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, মহান ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং ৭৫ এর ১৫ আগস্টসহ বিভিন্ন সময় স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে নিহত শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সুলতান শরীফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধমনীতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবাহিত বলেই বাংলাদেশে আজ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্ভব হচ্ছে। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম নির্মূল কমিটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যে আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন, একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের আওতায় আনতে সেই আন্দোলন শেখ হাসিনাকে নিঃসন্দেহে সাহস যুগিয়েছে।
বক্তারা বলেন, বহু বাধা-বিপত্তি, জেল-জুলুম-হত্যার বন্ধুর পথ অতিক্রম করে গত ২৪ বছরে নির্মূল কমিটির আন্দোলন আজ বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনিত। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর থেকে এ পর্যন্ত ২১ জন শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধাপরাধীর বিচার সম্পন্ন হয়েছে, যা শহীদ জননীর আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয় বলেই আমরা মনেকরি। যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার বানচালের জন্যে ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির সরকার উৎখাতের অপচেষ্টা হচ্ছে এমন অভিযোগ করে বক্তারা এ বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্যে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে ছিলো একটি মনোজ্ঞ সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী শাহনাজ সুমি, বাপিতা, মুজিবুল হক মনি, রুবি হক ও শিশু শিল্পী রাফা হক, নাহিয়ান পাশা ও আনভিতা।
অনুষ্ঠানে ব্রিটেনে বসবাসরত বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ২১ জানুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা