১১ মে, ২০১৬ ১১:৫৫

ভোট হচ্ছে সিলেটে, ক্যাম্পেইন লন্ডনে!

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য:

ভোট হচ্ছে সিলেটে, ক্যাম্পেইন লন্ডনে!

'সিলেট টু বিলেত', 'সুরমা টু টেমস' এসব উপমা এখন সবারই জানা। সিলেটে মাথা ব্যাথা হলে ভিকস যাবে লন্ডন থেকে এটাই যেখানে রীতি সেখানে যখন সিলেটে লেগেছে ভোটের হাওয়া তখন বিলেত খ্যাত ব্রিটেনেতো সেই বাতাস নাড়া দিবেই। তাই ভোট সিলেটে হলেও জয়-পরাজয়ের নিয়ামক হিসাবে কাজ করছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা! প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভোটাধিকার নেই তো কি হয়েছে, ভোটের উত্তেজনা ষোলআনাই রয়েছে তাদের।

এবারের বৃহত্তর সিলেটে ইউপি নির্বাচনে অন্তত ৫০ জন প্রবাসী প্রার্থী রয়েছেন। আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রবাসী প্রার্থীও রয়েছেন অনেকে। এরমধ্যে রেকর্ড সংখ্যক প্রার্থী রয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলার প্রবাসী অধ্যুষিত থানা জগন্নাথপুরে। এই উপজেলার সাত ইউনিয়ন পরিষদে ৩৭ জন প্রার্থীর ১৮ জনই ব্রিটেন প্রবাসী! এরা ব্রিটেনের যে শহরেই থাকেন না কেনো এদেরকে স্থানীয় ভাবে বলা হয় লন্ডনী। আর তাই এসব প্রার্থীর মার্কার পরিচয় ছাপিয়ে মানুষের মুখে মুখে লন্ডনী প্রার্থীর কথাই শোভা পাচ্ছে বেশী। যদিও বেশিরভাগ ইউনিয়নে ভোট শেষ তারপরও বাকি নির্বাচনগুলোকে ঘিরে উত্তেজনা, আলোচনা, সমালোচনা, বিশ্লেষনের শেষ নেই।

বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রার্থীদের জন্য ব্রিটেনের বিভিন্ন শহরে শহরে চলছে সভা, প্রচারণা। সেই প্রচারণাতেও এবার পেয়েছে ভিন্নতা। নিজ নিজ এলাকার পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস, ভিডিও ম্যাসেজ দিয়ে অনেকে ভোট চাইছেন। সেই সাথে লন্ডন থেকে বাংলাদেশে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়েই গ্রামের ইলেকশন জমায়েতের প্রতি আহবান জানাচ্ছেন সমর্থনের জন্য। 

অনেকেই নিজ সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে ভিডিও ডকুমেন্টারী তৈরি করে সেটাও সামাজিক মাধ্যম, হোয়াটস আপ ইত্যাদি গ্রুপে প্রচারণা চালাচ্ছেন। সেই সাথে চলছে নির্বাচনী ফান্ড কালেকশনের প্রেষ্টিজিয়াস লড়াই! নির্বাচনকে ঘিরে প্রবাসী ফান্ডিংয়ের প্রতিযোগিতায়ও সবাই সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। ব্যক্তি ডোনেশনে যেমন চলছে প্রতিযোগিতা আবার এলাকাগত ভাবে ফান্ড কালেকশনেও চলছে প্রতিযোগিতা। অনেক প্রবাসী আবার বাংলাদেশে ইলেকশনের ঠিক আগে আগে  নিজের পছন্দের প্রার্থীর প্রতি সমর্থন জানাতে চলে যাচ্ছেন স্বশরীরে।
 
অপরদিকে প্রার্থীরাও প্রবাসী সমর্থনের দিকে জোড় দিচ্ছেন বেশী। এতে করে যেমন ভোটের যোগান হচ্ছে তেমনি ভোটের জন্য ফান্ড যোগানও হচ্ছে। প্রবাসী আয়ের উপর সিলেটের বেশীরভাগ পরিবারগুলো নির্ভরশীল আর তাই প্রবাসীর কথায় ভোটের সিদ্ধান্ত হয়, এটাই রেওয়াজ।  

বিলেতে বহুল প্রচারিত বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল এস এর বার্তা সম্পাদক কামাল মেহেদী জানান, গত ৩ মাসে অন্তত ব্রিটেন এবং ইউরোপের শতাধিক সংবাদ কাভার ও প্রচার করতে হয়েছে শুধুমাত্র বৃহত্তর সিলেটের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। 

ব্রিটেনের মূলধারার রাজনীতির সাথে যুক্ত সাংবাদিক আহাদ চৌধুরী বাবু বলেন, যেহেতু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সবার আওতার মধ্যে থাকেন তাই এই নির্বাচনকে ঘিরে প্রবাসীদের আগ্রহ তুলনামূলক সংসদ নির্বাচনসহ অন্য যেকোন নির্বাচনের চেয়ে বেশী থাকে। একই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের প্রার্থী হওয়ায় নিজ নিজ এলাকার প্রার্থী নিয়ে একটি প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেন প্রবাসীরা।


বিডি প্রতিদিন/ ১১ মে, ২০১৬/ হিমেল-১৫

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর