আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের হিউস্টন সংলগ্ন উডসবরো সিটি কাউন্সিলের অনুমতি নিয়ে ক্যাসিনো চালু করেছিলেন বাংলাদেশি-আমেরিকান রে নিহাল ওরফে রহিম (৪০)। কিন্তু বাধ সেধেছে ফেডারেল কর্তৃপক্ষ। এর খেসারত হিসেবে রহিমকে গ্রেফতার বরণও করতে হয়েছে। রহিম এখন আইনি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে ক্যাসিনোর বৈধতা আদায়ের চেষ্টা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক এবং সন্দ্বীপের সন্তান রহিম জানান, উডসবরো সিটির পারমিট রয়েছে। প্রয়োজনীয় ট্যাক্সও পরিশোধ করেছি। স্থানীয় সকল প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই ব্যবসা পরিচালনা করছিলাম। ফেডারেল কর্তৃপক্ষ আমার পেছনে কেন লেগেছে বুঝতে পারছি না।
দীর্ঘদিন নিউইয়র্কে বসবাসের পর টেক্সাসে ব্যবসা শুরু করেন রহিম। সেখানে তার রয়েছে হোটেল, মোটেল, রিয়েল এস্টেট, ওয়্যারহাউজ এবং কনভেনিয়েন্স স্টোর। সিটি হলের ভবনেই তার মালিকানাধীন ক্যাসিনো হেরটিক্স। কাসিনো বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। ব্যবসাও চলছিল ভালোই। ফেডারেল প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার ডলার করে আয় করছিলেন রহিম।
গত ৫ মে রে নিহালকে এফবিআই গ্রেফতার করে হেরটিক্স স্টোর থেকে। ৮ মে উডসবরোর কর্পাস ফেডারেল কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান।
এফবিআই’র বিশেষ প্রতিনিধি শাউনা ডানলপ বলেন, গত ২৬ এপ্রিল রহিমকে ফেডারেল কোর্টের গ্র্যান্ডজুরিরা অভিযুক্ত করেন বেশ কয়েকটি গুরুতর ধারায়। গত বছর থেকেই এফবিআই তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়েই 'বেআইনিভাবে' পরিচালিত ক্যাসিনো বন্ধ করে দেয়া হয়।
উপার্জিত অর্থ রহিম হুন্ডির মাধ্যমে অন্যত্র পাচার করেছেন বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। নিহালের এই 'অবৈধ' কর্মকাণ্ডের সাথে আরো কয়েকজন জড়িত বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। ইউএস এটর্নি অফিস থেকে জানা গেছে, অভিযোগগুলো প্রমাণিত হলে রহিম তথা নিহালের সর্বোচ্চ ২৫ বছরের কারাদণ্ড এবং নামে-বেনামে যত সম্পদ রয়েছে সবকিছু বাজেয়াপ্ত করা হবে। ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল ব্যাংকের স্থানীয় শাখায় তার একাউন্টে ৮১ হাজার ১৭১ ডলার ৩৫ সেন্ট জব্দ করা হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের সময় পাওয়া ১১ হাজার ৫৬২ ডলারও জব্দ করা হয়।
রহিম বলেছেন, অঙ্গরাজ্য এবং সিটি প্রশাসনের সাথে ফেডারেল প্রশাসনের আইনে কোন সংঘাত থাকলে সে দায় আমি নেব কেন? আইনি লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করবো আমি কোন অন্যায় করিনি। বেআইনিভাবে ক্যাসিনো পরিচালনা ও অর্থ পাচারের যে অভিযোগ উঠেছে, সবকিছুই মিথ্যা ও ভুল। বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্যে যে অর্থ পাঠিয়েছি, তার পুরোটাই সোনালি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে গেছে, অর্থাৎ বৈধ উপায়ে পাঠিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অঙ্গরাজ্যে যে অর্থ পাঠিয়েছি সেগুলোও ব্যাংকের চেকের মাধ্যমেই করা হয়। সবকিছুর রেকর্ড আছে। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন গ্র্যান্ডজুরিরা। আমাকে বক্তব্য প্রদানের কোনো সুযোগ এখনও দেয়া হয়নি। মামলার বিচার শুরু হলেই সবকিছু প্রমাণে সক্ষম হবো। ইতিমধ্যেই আমার এটর্নীর সাথে সরকার পক্ষের এটর্নির আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। হয়তো আদালতের বাইরেই সবকিছু মিটে যাবে।
বিডি প্রতিদিন/১৬ জুন, ২০১৭/ফারজানা