এবারের ওআইসি সম্মেলনে সৌদি আরব চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। সম্মেলনে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ এবং জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বোরহান উদ্দিন সম্মেলনে যোগ দেন।
সম্মেলনের পাশাপাশি মন্ত্রী সৌদি আরবের শ্রম ও সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী ড. আলি বিন নাসের আল গাফির সাথে বৈঠক করেন। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশের অভিবাসী শ্রমিকদের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন এবং দক্ষ শ্রমিক নিয়োগে সহায়তা কামনা করেন।
এর আগে গত বুধবার শ্রম মন্ত্রীদের চতুর্থ ইসলামী সম্মেলনের জন্য সিনিয়র অফিসারদের প্রস্তুতিমূলক বৈঠকের উদ্বোধনী অধিবেশন হয়। এতে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহপরিচালক জুলহাস আহমেদ এবং বাংলাদেশ দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান ড. নজরুল ইসলাম সহ দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ যোগ দেন।
ইসলামী সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) সদস্য দেশগুলোর মধ্যে কর্মসংস্হান এবং সামাজিক সুরক্ষা সহযোগিতার জন্য ওআইসি ফ্রেমওয়ার্কের কার্যকারিতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের জেদ্দায় ওআইসির শ্রম মন্ত্রীদের সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
এসময় তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে পেশাগত নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্যের উপর গুরুত্ব বাড়াতে হবে, শ্রম এবং পেশাগত প্রশিক্ষণ পর্যবেক্ষকের জন্য দক্ষতা ব্যাংক, আইনী সুরক্ষা এবং শ্রম বাজার আইন, সামাজিক নিরাপত্তা সুরক্ষা জোরদার করতে হবে।
জেদ্দায় ‘মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য একটি সাধারণ কৌশল প্রণয়ন’ বিষয়ে ওআইসি শ্রম মন্ত্রীদের চতুর্থ ইসলামি সম্মেলন শুরু হয়েছে। সৌদি আরবের শ্রম ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয় এবং ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) যৌথভাবে এ সম্মেলন আয়োজন করে।
নুরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী নানা অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসাধারণ এবং স্থিতিশীল ম্যাক্রো-অর্থনৈতিক সূচক ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত করবে।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য দক্ষ জনবলের ব্যবহারে বাংলাদেশ একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বিশ্বব্যাপী বাজারের শর্তাবলী এবং প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবকে মেনে চলার জন্য একটি সুশৃঙ্খল, নিরাপদ এবং সম্মানিত অভিবাসন প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে প্রায় ১১মিলিয়ন বাংলাদেশি ১৬৫টি দেশে বসবাস করছেন। তারা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি ঐসব দেশগুলিতে অবদান রাখছে। তাদের অধিকাংশই মুসলিম দেশে, বিশেষত সৌদি আরবে এবং অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলোতে কাজ করছে।
নুরুল ইসলাম বলেন, এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে যে নিরাপদ অভিবাসন বিষয়টি সামাজিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন মোকাবেলার একটি কার্যকর হাতিয়ার, যার মধ্যে রয়েছে দারিদ্র্য, বৈষম্য এবং বেকারত্ব হ্রাস। নিরাপদ অভিবাসন জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সংযুক্ত। বাংলাদেশ অভিবাসী কর্মীদের ও তাদের পরিবারের জন্য অধিকার রক্ষা এবং নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও নিয়মিত অভিবাসনের জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুমোদন করেছে বলে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী জানান।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, এই সম্মেলনে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর শ্রম বিষয়ের বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান হবে, এই বিষয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও ভবিষ্যতে আরও ভালোভাবে কাজের সুযোগ তৈরি করবে।
বিডি-প্রতিদিন/ আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর