স্মৃতি হাতড়ে হাতড়ে আকস্মাৎ কলেজ জীবনে ফিরে যাওয়া, বয়সকে অস্বীকার করে হয়ে ওঠা দুর্দমনীয় তরুণ- এমনি এক আবহে মেতে ওঠেছিলেন কানাডার টরন্টোয় বসবাসরত নটরডেমনিয়ানরা।
গত ১ ফেব্রুয়ারি টরন্টোয় বসবাসরত নটরডেম কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীরা সমবেত হয়েছিলেন স্কারবোরোর গ্র্যান্ড সিনামন ব্যাঙ্কুয়েট হলে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নটরডেমের গ্র্যাজুয়েটরা এই পুনর্মিলনীতে এলেও ব্যাঙ্কুয়েট হলের কক্ষটা যেনো হয়ে ওঠে এক টুকরো নটরডেম ক্যাম্পাস।
অনুষ্ঠান শুরুর আগ থেকেই মঞ্চের পেছনের পর্দায় প্রক্ষেপিত হয় পুরনো দিনের ছবি, নটরডেম কলেজের উপর প্রামাণ্যচিত্র, বর্তমান অধ্যক্ষের ভিডিও বার্তা। প্রবাসে থাকা সাবেক নটরডেমিয়ানদের প্রাণখোলা শুভেচ্ছা জানান কলেজের অধ্যক্ষ।
শুরুতেই এলামনাইর সাংগঠনিক সম্পাদক মেজর (অব:) খাজা ওয়াকার সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। তসলিম আহমদের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় শুরু হয় অনুষ্ঠান। হঠাৎ সাবেক শিক্ষার্থীদের মঞ্চে ডেকে এনে যেন অনেক বছর পেছনে ফেলে আসা স্মৃতির মুখোমুখি করে দেন উপস্থাপক তসলিম। শিক্ষার্থীরাও যেনো কোনো দ্বিধা না রেখেই উন্মুক্ত করে দিয়েছেন স্মৃতির ভাণ্ডার। সাবেক শিক্ষার্থীদের আলাপচারিতার ফাঁকে ফাঁকে চলেছে ছিল নৃত্য পরিবেশনা। প্রিয়ন্তি, নূসরাত ঊর্মি ও তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নাচের ছন্দ যেনো আলাপনকেও ছন্দময় করে দেয়।
নটরডেম কলেজ এলামনাই এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম জহিরউদ্দিন সংগঠনের উপদেষ্টাদের পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় উপদেষ্টাদের মধ্যে আবদুল মান্নান, কানন বড়ুয়া, আনোয়ারুল কবীর শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।
এ পর্যায়ে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট জামিলুর রহিম সংগঠনের নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তাদের পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় প্রেসিডেন্ট জামিলুর রহিম সমবেত গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তৃতায় বলেন, প্রতিষ্ঠান হিসেবে নটরডেম কলেজ যেমন দেশের সেরা প্রতিষ্ঠান, এর শিক্ষার্থীরাও কর্ম এবং ব্যক্তিজীবনে নিজেদের সেরা হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আর এই এলামনাই এসোসিয়েশনও সেরা সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে।
তিনি সমবেত গ্র্যাজুয়েটদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, কানাডায় বসবাসরত নটরডেমিয়ানদের সিংহভাগই এই সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত আছে। আগামীতে নটরডেমিয়ানদের নিয়ে আমরা আমাদের অনুষ্ঠানের আয়োজন করবো। তিনি এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা চান।
পরে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে অতিথি শিল্পী হিসেবে সঙ্গীত পরিবেশন করেন সারা বিল্লাহ, জুলফিয়া আহমেদ ইন্টু । পরে এম এ বারী মঞ্জু এবং জুলফিয়া আহমেদ ইন্টু দম্পতি যৌথভাবে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। কবিতা আবৃত্তি করেন ভিক্টর গোমস।
এর আগে এলামনাইর সদস্যদের মধ্য থেকে গান গেয়ে শোনান পল রয়, জি এম মসিউদ্দিন অরুপ, ডমিনিক, শরীফ এবং এলামনাই সন্তান নিবির প্রমুখ। গভীর রাত পর্যন্ত সুরের মুর্ছনায় ডুবে থাকেন নটরডেমিয়ানরা। যন্ত্রাংশে শিল্পীদের সহায়তা করেন রনি পালমার, জাহিদ, নোয়েল, জয়, ড. আনিস প্রমুখ। সবশেষে অনুষ্ঠিত হয় র্যাফেল ড্র। অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক চঞ্চল সাহার সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা