বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গত ১৮ মার্চ থেকে মালয়শিয়ায় চলমান নিয়ন্ত্রণ আদেশ গত ৪টা মে থেকে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে কিছুটা শিথিল এখন। এসময়ে নিজ দেশের নাগরিকদের দেশে প্রবেশে কোন বাঁধা না থাকলেও বিদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে দেশটিতে এখনো বহাল।
ফলে দেশে ছুটিতে গিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মাঝে দিন কাটাচ্ছেন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের কয়েক হাজার অভিবাসী শ্রমিক। এর মাঝে দেশে থেকেই অনেকের ভিসা এখন শেষের পথে। আশা ছিল দেশ থেকে ফিরে নতুন ভিসার জন্য জমা দিবেন তারা। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ আদেশ কিছুটা শিথিল হলেও বিদেশীদের জন্য বেঁধে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা এখনো প্রত্যাহার না হওয়ায় দেশে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন অনেকে।
এদিকে বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত মালয়েশিয়ান নাগরিকরা যেকোনও সময় দেশে প্রবেশ করতে পারবে। সিনিয়র মন্ত্রী (সিকিউরিটি) ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রায় দেড় মাস আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে। আগামী ১৮ মে এয়ার এশিয়া ইন্দোনেশিয়ার সুরাবাইয়া থেকে কুয়ালালামপুর রুটে বিমানের ফ্লাইট পরিচালনা করবে ঘোষণা দিলে তার প্রতিক্রিয়ায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, বিদেশি অভিবাসীসহ ভ্রমণপিপাসুদের মালয়েশিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে এখনও। তবে এই নিষেধাজ্ঞা কতদিন বহাল থাকবে তা বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে জানিয়ে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, যাদের মালয়েশিয়ার কাজের ভিসা রয়েছে তাদেরকেও প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না এখন। আমরা এখন শুধু অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করার অনুমতি দিয়েছি। যাতে করে আমাদের নাগরিকরা দেশের ভিতরে চলাচল করতে পারে। এ সময় যদি আমাদের নাগরিকরা বাইরের দেশ থেকে প্রবেশ করে তাহলে তাদের ১৪ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গত ১৮ মার্চ থেকে মালয়েশিয়া থেকে সব বিমানের ফ্লাইট বাতিল করা হয়। কিন্তু তার আগে বহু বাংলাদেশিসহ সেদেশে অবস্থানরত বিদেশি অভিবাসীরা ছুটিতে নিজ দেশে যাওয়ার পর এখনও ফিরতে পারছে না। যার কারণে অনেকেই রয়েছে দুশ্চিন্তায়। সেই সাথে ভিসা শেষ হওয়ার পথে রয়েছে অনেকের। তবে ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে প্রবেশে কোনো বাধা থাকবে কি না সে ব্যাপারে এখনও সেদেশের সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়নি। তবে একাধিক সূত্র বলছে, চলমান নিয়ন্ত্রণ আদেশ কেটে গেলে ভিসা শেষ হলেও প্রবেশে বাধা থাকবে না।
এদিকে নিয়ন্ত্রণ আদেশ শিথিল হলেও গণজমায়েত ও সামাজিক দূরত্বের ঘূর্ণিপাকে পড়ে এখনো খুলার অনুমতি মেলেনি বাংলাদেশ দূতাবাসসহ অন্যান্য দুতাবাস গুলোর। ফলে ইমিগ্রেশন খুললেও দূতাবাস এ রিনিউ করতে দেওয়া পাসপোর্ট ডেলিভারি নিতে না পারায় ভিসার জন্য অবেদন করতে না পেরে চরম হতাশায় ভুগছেন সেখানে অবস্থানকারী কয়েক হাজার প্রবাসী। তবে এসব ব্যাপারে এখনই মালয়েশিয়া সরকারের সাথে আলোচনা করে পথ তৈরি করতে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশে ছুটিতে থাকা ও মালয়েশিয়া অবস্থান করা প্রবাসীরা।
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ