করোনার অজুহাতে বিদেশ থেকে উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী আনার ওপর ট্রাম্পের জারিকৃত সাময়িক স্থগিতাদেশ সঠিক ছিল না বলে ক্যালিফোর্নিয়াস্থ ফেডারেল কোর্ট গতকাল বৃহস্পতিবার এক নির্দেশ দিয়েছেন। ট্রাম্পের ঐ নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে মাইক্রোসফট, গুডইয়ার টায়ার এবং ইক্কোন মোবাইলের মত বড় বড় কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে আদালতের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়েছে।
অবিলম্বে প্রয়োজন অনুযায়ী বিদেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক আনার কার্যক্রম শুরুর কথাও বলেছেন ক্যালিফোর্নিয়া নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্ট ফেডারেল কোর্টের জজ জেফরি এস হোয়াইট। উল্লেখ্য, গত জুনে ট্রাম্পের জারিকৃত ঐ স্থগিতাদেশের কারণে এইচ-ওয়ান বি ভিসা স্থগিত করা হয়। গেস্ট ওয়ার্কার ভিসায় মৌসুমভিত্তিক শ্রমিক আনাও সম্ভব হচ্ছিল না। এমনকি শিল্পী-সাহিত্যিকরাও সাংস্কৃতিক কর্মী বিনিময়ের ভিসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
২৫ পাতার এই নির্দেশে বিচারপতি মন্তব্য করেছেন যে, নন-ইমিগ্রেন্ট ভিসায় বিদেশি শ্রমিক আনার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত প্রদানের এখতিয়ার প্রেসিডেন্টের নেই, সেটি কেবলমাত্র কংগ্রেসের রয়েছে। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের আমলে নিয়োগকৃত এই জজ আরো উল্লেখ করেছেন, অভিবাসনের সাথে সম্পর্ক রয়েছে-এমন কর্মীদের আনার ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট যথেচ্ছাচার করেছেন নির্বাহী আদেশ জারির মাধ্যমে। যা স্পষ্টতই বিদ্যমান আইনের পরিপন্থি।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের জারিকৃত ঐ আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশ থেকে এমন কোন শ্রমিক-কর্মচারী আনা যাবে না, যার ফলে আমেরিকানদের কর্মসংস্থান সংকট তৈরি হতে পারে। করোনাভাইরাসের কারণে বেকার হওয়া আমেরিকানদের পুনর্বাসন করার স্বার্থে এই নির্দেশ জারি করার কথা বলা হয়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, অভিবাসন সংস্থা এবং জাতিসংঘ সংস্থার তথ্য অনুযায়ী সারাবিশ্বে বর্তমানে ৮ কোটি মানুষ রিফিউজি হিসেবে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় চাচ্ছে। তেমনি অবস্থায় সবচেয়ে ধনী ও কম-ঘনবসতি সম্পন্ন আমেরিকায় মাত্র ১৫ হাজার রিফিউজিকে আশ্রয় প্রদানের সিদ্ধান্তটি নিতান্তই অমানবিক ও তামশার সামিল বলে মন্তব্য করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, তিন বছরের অধিক সময় যাবত বাংলাদেশও ১২ লাখ রিফিউজিকে আশ্রয় দিয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক