শরাফত হোসেন বাবুর নেতৃত্বাধীন হোস্ট কমিটির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের তদন্ত এবং ফোবানায় নতুন প্রজন্মের সম্পৃক্ততার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনার জন্যে ৫ সদস্যের একটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ১৩ অগাস্ট শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে একটি পার্টি সেন্টারে অনুষ্ঠিত টাউন হল মিটিংয়ে আরো উল্লেখ করা হয়, লেবার ডে উইকেন্ড এবং থ্যাঙ্কসগিভিং উইকেন্ডে পৃথক দুটি ফোবানা সম্মেলনের ঘোষণার মধ্যদিয়ে মা-বাবার সংস্কৃতির অনৈক্যে প্রবাস প্রজন্ম বিতশ্রদ্ধই শুধু নয়, তারা বাংলাদেশী আমেরিকানদের কোন অনুষ্ঠানে জড়িত হবার আগ্রহও হারিয়ে ফেলেছে।
অথচ ৩৪ বছর আগে প্রবাসীদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন সুসংহত করার পাশাপাশি প্রবাস প্রজন্মে বাঙালি সংস্কৃতি প্রবাহিত করার সংকল্পে ফোবানার যাত্রা শুরু করা হয়। ফোবানার স্টিয়ারিং কমিটির সাবেক চেয়ারপার্সন আতিকুর রহমান সালুর সভাপতিত্বে এবং সাবেক চেয়ারম্যান ডা. খন্দকার মাসুদুর রহমান ও মূলধারার রাজনীতিক গিয়াস আহমেদের যৌথ সঞ্চালনায় এ মিটিংয়ে গঠিত সমঝোতা-সংলাপ কমিটির সদস্যরা হলেন আতিকুর রহমান সালু, গিয়াস আহমেদ, ডা. খন্দকার মাসুদুর রহমান, খন্দকার ফরহাদ এবং আসেফ বারি টুটুল। মিটিং শেষে গিয়াস আহমেদ জানান, ফোবানার দ্বিধা-বিভক্তিতে কমিউনিটি বিরক্ত। প্রবাসের প্রজন্ম মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এমন দুঃখজনক পরিস্থিতির অবতারণা হয়েছে অযোগ্য নেতৃত্বে ফোবানা নিপতিত হওয়ায়।
গিয়াস আহমেদ বলেন, দলমত নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশী আমেরিকার ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে ফোবানার বাংলাদেশ সম্মেলন। সে চেতনায় ফিরিয়ে আনতে পারলেই দূর হবে অনৈক্য। জাতিগতভাবে এই নর্থ আমেরিকায় আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হতে পারি তাহলেই আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের পথ সুগম হবে।
লেবার ডে উইকেন্ড (৩-৫ সেপ্টেম্বর) আসতে বাকি দু’সপ্তাহ। এত স্বল্প সময়ের মধ্যে কীভাবে ঐক্য প্রক্রিয়া সম্ভব? নাকি ঐক্যের স্বার্থে ফোবানা সম্মেলন পিছিয়ে থ্যাঙ্কসগিভিং উইকেন্ডের কথা ভাবছেন-এমন প্রসঙ্গে গিয়াস আহমেদ বলেন, আমরা সর্বান্তকরণে আশা করছি ঐক্য। এজন্যে যতটা সম্ভব সকলকেই ছাড় দেয়ার মনোভাব রাখতে হবে। ‘সালিশ মানি তবে তাল গাছটা আমার চাই’-এমন মনোভাবে আমরা বিশ্বাসী নই। আশা করছি কমিউনিটির স্বার্থে সকলের আন্তরিক সহায়তা পাবো ঐক্যবদ্ধ ফোবানা সম্মেলনের ব্যাপারে। তবে গিয়াস আহমেদ উল্লেখ করেছেন যে, শরাফত হোসেন বাবুসহ অন্যপক্ষ যদি ঐক্যের আহবানে সাড়া না দেয় তাহলে কমিউনিটির বৃহত্তর স্বার্থে আমরা পরবর্তী চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবো।
এ মিটিংয়ে আরো ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি আলহাজ্ব বাবরউদ্দিন, বিএনপি নেতা মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, আনোয়ারুল ইসলাম, নিয়াজ আহমেদ জুয়েল, যুবদলের নেতা এম এ বাতিন, ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্টের শাহ শহীদুল হক সাঈদ, লায়ন্স ক্লাবের আহসান হাবিব, বাংলাদেশ সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, এনায়েত আলী, তারেক হাসান খান, ফোয়াদ হাসান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, করোনার পরিপ্রেক্ষিতে জি আই রাসেল এবং শিব্বির আহমেদের নেতৃত্বাধীন হোস্ট কমিটির ফোবানা সম্মেলন ইতিমধ্যেই লেবার ডে উইকেন্ড থেকে পিছিয়ে থ্যাঙ্কসগিভিং উইকেন্ডে নেয়া হয়েছে। তবে শরাফত হোসেন বাবুর নেতৃত্বাধীন হোস্ট কমিটির ফোবানা এখনও পিছিয়ে নেয়া হয়নি। তবে এই গ্রুপের সাথে ওয়াশিংটন মেট্রো এলাকার পরিচিত ও প্রতিষ্ঠিত সংগঠনসমূহের সম্পৃক্ততা নেই বলে এই টাউন হল মিটিংয়েও অনেকে উল্লেখ করেছেন। টাউন হল মিটিংয়ের আয়োজক ও অংশগ্রহণকারিগণের প্রায় সকলেই শরাফত হোসেন বাবু গ্রুপের ফোবানার সাথে কোন না কোনভাবে সম্পৃক্ত রয়েছেন। এবারও কয়েকজনের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল হোস্ট কমিটিতে। পরবর্তীতে সে সব নামের হেরফের ঘটানো হয়েছে বিশেষ উদ্দেশ্যে-এমন অভিযোগও করা হয় এই মিটিংয়ে। অপরদিকে, জিআই রাসেল এবং শিব্বির আহমেদের নেতৃত্বাধীন হোস্ট কমিটির পক্ষ থেকে কয়েকদিন আগে ‘মীট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে মেট্রো ওয়াশিংটন এলাকার সকল সংগঠনই তাদের ফোবানায় অংশগগ্রহণের জন্যে নাম তালিকাভুক্ত করেছেন বলে জানানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল