১১ জুন, ২০১৯ ১৮:২৬

পরিচ্ছন্ন মাঠে দুরন্ত শৈশব

জিলফুল মুরাদ :

পরিচ্ছন্ন মাঠে দুরন্ত শৈশব

শিশুরা বেড়ে উঠবে। এই বেড়ে উঠা মানে তো কেবল শারীরিকভাবেই নয়, এর সাথে জড়িত আছে মানসিক বিকাশও। কিন্তু জন্মের পর থেকে ফ্ল্যাটের মধ্যে বেড়ে উঠতে গিয়ে শিশুদের মানসিক বিকাশের পর্যাপ্ত অনুষঙ্গ প্রায় অনুপস্থিত। ভবিষ্যৎ সুনাগরিকদের যথাযথভাবে গড়ে তুলতে তাকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা রাষ্ট্র, অভিভাবক তথা সমাজের সকলেরই দায়িত্ব রয়েছে। এজন্য দরকার তার মানসিক বিকাশ। আর এই মানসিক বিকাশের জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে খেলাধুলা।

কিন্তু শহরগুলোতে খেলাধুলার ব্যবস্থা কোথায়? উন্মুক্ত পরিবেশে খেলাধুলা শিশুর বিকাশে সহায়ক, তা অনুপস্থিত। নেই মাঠ, নেই পর্যাপ্ত অনুষঙ্গ। তাই শিশুরা ঘরের মেঝে, বাড়ির ছাদকে বানিয়ে নিয়েছে খেলা মাঠ। কেউ বুদ হয়ে থাকে কম্পিউটার মনিটর বা মোবাইলের স্ক্রিনে। কম্পিউটার-মোবাইল গেমস আর টেলিভিশনের কার্টুন কেড়ে নিচ্ছে খোলা পরিবেশে বেড়ে ওঠার মানসিক বিকাশের সুযোগ। যদিও জাতিসংঘের শিশু সনদে বলা হয়েছে, শিশুদের শারীরিক, মানসিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের উপযোগী পরিবেশ রক্ষা ও সৃষ্টি করা রাষ্ট্রের কর্তব্য। জাতীয় শিশুনীতি ও শিক্ষানীতিতেও শিশুর বিকাশ নিশ্চিত করার জন্য অনেক কথা বলা হয়েছে। অথচ বাস্তবে হচ্ছে উল্টোটা। সুযোগ সৃষ্টি তো হচ্ছেই না, যেটুকু সুযোগ আছে, তা-ও রক্ষা করা যাচ্ছে না। না আছে খেলাধুলা বা শরীরচর্চার সুযোগ, না আছে মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়ানোর আনন্দ। বিদ্যা অর্জন বা বিকশিত হওয়ার জন্য সুস্থ দেহ ও সুন্দর মন দুটিই জরুরী। এ জন্য দরকার উন্মুক্ত পরিবেশে খেলাধুলার সুযোগ।

সারা শহরজুড়ে শুধু বিল্ডিং। এখানে খেলার মাঠ কোথায়। মুক্তিযুদ্ধের আগে যেসব খেলার মাঠ ছিল; সেগুলোও এখন আর নেই। আমাদের সন্তানদের জন্য খেলাধুলার উপযোগী তো দূরের কথা একটি হাঁটা-চলার জন্যও তেমন ভালো জায়গা মেলে না। আর যে ক’টি খেলার মাঠ আছে সেগুলোর অনেকটিরই যথেষ্ট পরিবেশ নেই। পরিচ্ছন্নতার অভাবে সেগুলো পরিবেশ হারিয়েছে। তবে, আশার দিক হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান খেলার মাঠের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে। সম্প্রতি এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছে ‘ডেটল হারপিক পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ’ ক্যাম্পেইন। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ রফিককে সঙ্গে নিয়ে পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ ক্যাম্পেইন রাজধানীর বিভিন্ন মাঠের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে। শহরের মাঠগুলোকে পরিচ্ছন্ন করে খেলাধুলার পরিবেশ ফিরলে হয়তো শৈশবের দুরন্তপনা আবারও দৃশ্যমান হবে।

লেখক : ফ্রিল্যান্স লেখক

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

সর্বশেষ খবর