অমর একুশে বইমেলা, ঐতিহ্যবাহী ও জ্ঞানসমুদ্র আপন স্রোতে অভিনব চিত্রকল্পে প্রবহমান মেধা ও মননের মেলা। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখ বাংলা ভাষার জন্য আত্মোৎসর্গের যে বীরত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে, সেই স্মৃতিকে অম্লান রাখতেই এই মাসে আয়োজিত এই বইমেলার নামকরণ করা হয় অমর একুশে বইমেলা।
মানসিক বিকাশে জ্ঞানাজনে পুস্তকের অবদান অনস্বীকার্য। এই পুস্তক পারে নির্মল, সবচেয়ে মানবিক ও সৃজনশীল হয়ে গড়ে তুলতে। এই মানসিক বিকাশ শুধু সৃষ্টিশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে না, বরং ইতিবাচক মানুষ হিসেবেও গড়ে তোলে।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা, প্রাণের অবিবেচ্ছদ্য অংশ মনস্তাত্ত্বিক প্রক্রিয়া জড়িত, উপলব্ধি, সংযোগ এবং যুক্তি, ব্যাপকভাবে পরিচিত। বই মনোজগৎ পরিবর্তনের এক অপূর্ব ও সবচেয়ে প্রাচীন মাধ্যম ।তথ্য, বিবরণ বা গুণাবলি সম্পর্কে ধারণা দেয়া, যেটি অর্জিত হয় উপলব্দির অনুসন্ধান কিংবা শিক্ষা গ্রহণের ফলে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক শিক্ষা সর্বজনস্বীকৃত মাধ্যম হিসেবেও।
এছাড়াও বইমেলা চলাকালীন আলোচনা সভা, কবিতা পাঠের আসর বসে; প্রতি সন্ধ্যায় থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মেলাতে লেখককুঞ্জ রয়েছে, যেখানে লেখকেরা উপস্থিত থাকেন এবং তাদের বইয়ের ব্যাপারে পাঠক ও দর্শকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এছাড়া মেলার তথ্যকেন্দ্র থেকে প্রতিনিয়ত নতুন মোড়ক উন্মোচিত বইগুলোর নাম, লেখক ও প্রকাশকের নাম ঘোষণা করা হয় ও দৈনিক প্রকাশিত বইয়ের সামগ্রিক তালিকা লিপিবদ্ধ করা হয়। বিভিন্ন রেডিও ও টেলিভিশন চ্যানেল মেলার মিডিয়া স্পন্সর হয়ে মেলার তাৎক্ষণিক খবরাখবর দর্শক-শ্রোতাদেরকে অবহিত করে। এছাড়াও মেলার প্রবেশদ্বারের পাশেই স্টল স্থাপন করে বিভিন্ন রক্ত সংগ্রাহক প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে রক্ত সংগ্রহ করে থাকে।
সুচিন্তা ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে প্রকৃত জ্ঞানাজনের মাধ্যমে এক্ষেত্রে সঠিক সিদান্ত গ্রহণের সক্ষমতাও গড়ে উঠে। সংজ্ঞা প্রদান পরিপূর্ণভাবে কোন সংজ্ঞা দ্বারা সীমাবদ্ধ নয়।
জ্ঞান ও জ্ঞানীর কদর সর্বত্রই। শিক্ষাক্ষেত্রে ভালো ফলাফল অর্জনের জন্য জ্ঞানার্জন, সৃষ্টিশীল ক্ষেত্রে জ্ঞানার্জন প্রয়োজন। ভালো ও মন্দের পার্থক্য করার সক্ষমতা গড়ে উঠে।জ্ঞানার্জন কয়েক ধরনেরই হতে পারে কর্মের ক্ষেত্রে জ্ঞানার্জন, সাম্প্রতিক সময়ে মানুষ মাত্রই নিজেকে বিকশিত করার চেষ্টায় সদা নিয়োজিত রাখতে পছন্দ করে। মানুষের ভেতরে এক প্রকার সত্তা বিরাজ করে। পুস্তকেরও রয়েছে বিভিন্ন প্রকারভেদ। পুস্তক জ্ঞানের পরিধি যেমন বাড়িয়ে থাকে তেমনি মানসিক বিকাশ ঘটায়।
মানবিক মানুষ মাত্রই প্রাণের সহিত জ্ঞানের বন্ধন সৃষ্টি করে থাকে। লেখক, কবি-সাহিত্যিকদের মিলনমেলা এই বইমেলা। এছাড়া স্টল ও অঙ্গসজ্জার জন্য দেয়া হয় ‘সরদার জয়েনউদদীন স্মৃতি পুরস্কার’। সর্বাধিক গ্রন্থ ক্রয়ের জন্য সেরা ক্রেতাকে দেয়া হয় ‘পলান সরকার পুরস্কার’ এবং নানান সেক্টরের লেখকের জন্য থাকে মূল আর্কষণ 'বাংলা একাডেমি পুরস্কার'।
আসুন পুস্তকের সহিত নিজের সংস্পর্শ বজায় রেখে সৃষ্টিশীল ক্ষেত্রে হয়ে উঠি হিতকর। মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে পুস্তককে বানিয়ে ফেলি প্রধানতম মাধ্যম।