চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে জাপানে এবং সেপ্টেম্বরের শুরুতে কানাডায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা চালু হচ্ছে।
ইতোমধ্যে জাপানের টোকিও, কানাডার টরেন্টো ও অটোয়ায় কারিগরি টিমের যন্ত্রপাতি স্থাপন, প্রশিক্ষণের কাজ শেষ হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের এনআইডি উইং মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “যন্ত্রপাতি স্থাপন শেষ হয়েছে, অনেককে এনআইডি প্রদানে টেস্ট অ্যান্ড ট্রায়ালও চলছে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে শিগগির।”
জুলাই মাসে জাপানে শুরু করার কথা থাকলেও সেখানকার স্থানীয় জটিলতায় তা পিছিয়ে যায়। নির্বাচন কমিশন-ইসি সচিব আখতার আহমেদ জাপানে গেছেন। তার সফরসূচি অনুযায়ী- তিনি ১৯ থেকে ২১ অগাস্ট পর্যন্ত টোকিওতে থাকবেন। সেখানে কারিগরি টিমের যন্ত্রপাতি স্থাপন, দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট জনবলকে প্রশিক্ষণের বিষয়টি পরিদর্শন ও তত্ত্বাবধান করবেন তিনি।
চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে কানাডায় যাচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। সিইসি সফরসূচি অনুযায়ী- তিনি ২৮ অগাস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কানাডায় থাকবেন। ভোটার নিবন্ধন ও এনআইডি সেবার কাজ উদ্বোধন করবেন তিনি। তার সঙ্গে যাচ্ছেন লালমনিরহাট জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. লুৎফুল কবির সরকার। তারা সেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন বিষয়ে মতবিনিময় সভাও করবেন।
কানাডায় ১০ অগাস্ট থেকে কারিগরি টিম কাজ করছে। জাপান ও কানাডায় এনডিআই সেবা চালু হলে ১০ দেশের বাংলাদেশি প্রবাসীরা ১৭টি মিশন অফিসের মাধ্যমে এ সেবার আওতায় আসবেন।
২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন শুরুর সময়ই প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করা ও এনআইডি দেওয়ার দাবি ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন নিয়ে নানা ধরনের জটিলতা পেরিয়ে তৎকালীন কমিশন ২০১৯ সালের নভেম্বরে মালয়েশিয়ায় অনলাইন নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু এরপর কোভিড মহামারীতে সেই উদ্যোগ থমকে যায়।
পরে আবার সেই কাজে গতি আনার উদ্যোগ নিলেও গত কমিশনের সময় ২০২৩ সালের জুলাইয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২৪ সালের ৫ অগাস্টের পটপরিবর্তনের পর আবার স্থবিরতা দেখা দেয় এ কার্যক্রমে। এ ধারাবাহিকতায় বর্তমান এ এম এম নাসির উদ্দিন কমিশন কার্যক্রম শুরু করে। ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের এনআইডি সেবা দেওয়া হচ্ছে।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত সাতটি দেশে মোট আবেদন করেছেন ৪৫ হাজার ১৮৪ জন। তাদের মধ্যে আঙুলের ছাপ দিয়ে নিবন্ধন সেরেছেন ২৮ হাজার ৯২৬ জন। তদন্তে বাতিল হয়েছে ৩ হাজার ৫৬৩টি আবেদন। বিভিন্ন উপজেলায় তদন্তাধীন রয়েছে ২১ হাজার ৮৮৯টি আবেদন। এখন পর্যন্ত প্রবাসে ১১ হাজারেরও বেশি নাগরিক জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছেন। পর্যায়ক্রমে ৪০টি দেশে এনআইডি সেবা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ