চীনের তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনে চীনা বিজ্ঞানীরা নতুন এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন। ব্যাকটেরিয়াটির নাম রাখা হয়েছে Niallia tiangongensis। এটি আবিষ্কৃত হয়েছে শেনঝো ১৫ মহাকাশ অভিযানের সময় সংগৃহীত জীবাণু নমুনা বিশ্লেষণ করে। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক জার্নাল Systematic and Evolutionary Microbiology-তে।
এই ব্যাকটেরিয়াটি বাতাসের উপস্থিতিতে বেড়ে ওঠে (অ্যারোবিক), ছত্রাকের মতো স্পোর তৈরি করে এবং লম্বাটে রডের মতো গঠনবিশিষ্ট। এটি পৃথিবীতে পাওয়া Niallia circulans নামের একটি ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে অনেকটাই মিল রাখে। তবে এর মধ্যে রয়েছে কয়েকটি বিশেষ জিনগত পরিবর্তন যা মহাকাশে জীবনের টিকে থাকার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, এই জীবাণুর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এটি জেলাটিন ভেঙে ফেলার ক্ষমতা রাখে। এই গুণটি এমন পরিবেশে কাজে আসতে পারে, যেখানে পুষ্টির অভাব রয়েছে। তাছাড়া, ব্যাকটেরিয়াটি এমন কিছু প্রোটিনে গঠনগত ও কার্যগত পরিবর্তন দেখিয়েছে, যা জীবাণু স্তর (বায়োফিল্ম) গঠন, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রতিরোধ এবং তেজস্ক্রিয়তার ক্ষতি মেরামত করতে সাহায্য করতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই বৈশিষ্ট্যগুলো দেখায়, ব্যাকটেরিয়াটি মহাশূন্যের কঠিন পরিবেশে টিকে থাকার জন্য নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। তবে, এটি মহাকাশচারীদের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে কিনা, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত কিছু বলা যায়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মহাকাশ অভিযানের সময় কোন জীবাণুগুলো বেঁচে থাকে এবং কীভাবে তারা অভিযানের উপর প্রভাব ফেলে, তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু সংক্রমণ ঠেকাতে নয়, বরং ভবিষ্যতের অভিযানে জীবাণুর উপকারী ব্যবহারের পথও খুলে দিতে পারে।
উল্লেখ্য, এর আগেও আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে নতুন জীবাণু প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে। এমনকি নাসার অত্যন্ত জীবাণুমুক্ত ক্লিন রুম থেকেও সম্প্রতি ২৬টি নতুন ব্যাকটেরিয়া আবিষ্কৃত হয়েছে। এসব গবেষণা ভবিষ্যতে মঙ্গলগ্রহে ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রেও সহায়ক হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল