বাংলা ভাষায় কথা বলায় 'বাংলাদেশি' বলে সন্দেহ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখার মতো গুরুতর অভিযোগ আগেই উঠেছিল হরিয়ানা সরকারের বিরুদ্ধে। ওসব পরিযায়ী শ্রমিকদের নাগরিকত্বের নথি চেয়ে হরিয়ানা থেকে রাজ্য পুলিশের কাছে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল। তা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় প্রতিবাদী পোস্ট করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। বাংলাভাষী শ্রমিকদের ওপর এমন ‘অত্যাচার’ বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি।
লাগাতার এনিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোকে কার্যত তুলোধোনা করেছেন মমতা। তার সেই চাপের মুখেই এবার কার্যত নতি স্বীকার করল হরিয়ানা সরকার। সেখানকার ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে থাকা ৩০ জন, যাদের নাগরিকত্বের প্রমাণ চাওয়া হয়েছিল, তাদের এবার মুক্তি দেওয়া হলো। তারা গুরুগ্রাম থেকে শিগগিরই মালদহে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হবেন বলে পশ্চিমবঙ্গের গণমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়েছে।
খবরে বলা হয়, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগ এসেছে সম্প্রতি। বাংলায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ বলে নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। স্রেফ সন্দেহের বশে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে ডিটেনশন ক্যাম্পে। এখানেই শেষ নয়, তারা আদৌ পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা কি না, তা জানতে নথিও চাওয়া হচ্ছে রাজ্য সরকারের কাছে। এসব অভিযোগ পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। এটা ‘বাংলা ভাষার ওপর সন্ত্রাস’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
মমতার এই লাগাতার বিরোধিতা নিয়ে এবার কড়া জবাব দিয়েছেন হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিং সাইনি। শনিবার এক্স হ্যান্ডল পোস্টে তার পালটা বক্তব্য, হরিয়ানা কিংবা দেশের কোথাও অনুপ্রবেশকারীদের ঠাঁই নেই। দেশের সুরক্ষার স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত। অথচ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এনিয়ে ‘ভুল’ রাজনৈতিক প্রচার করছেন বলে অভিযোগ সাইনির। তবে সোশাল মিডিয়ায় যতই যুক্তি দেখান হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী, তা স্পষ্ট তার সরকারের পদক্ষেপে। ইতোমধ্যে ধাপে ধাপে পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিকদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। গত দু'দিনে হরিয়ানা থেকে মালদহের চাঁচল ও হরিশ্চন্দ্রপুরে ফিরেছেন মোট ১৫ জন। এবার মুক্তি পাওয়া বাকি শ্রমিকরাও ফিরবেন শিগগিরই।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ