আফসোসে পুড়ছেন মুশফিকুর রহিম! মাত্র ২ রানের আক্ষেপে হতাশার কালো মেঘে ছেয়ে গেছে দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের মুখায়ব। সুযোগ থাকার পরও তিন অংকের জাদুকরি ইনিংসটি খেলতে না পেরে নিজেই নিজেকে দুষতে পারেন। ইনিংসের ৫০ নম্বর ওভারে যখন ব্যাটিং করছিলেন সাবেক অধিনায়ক, তখন সিরিজে প্রথম ও ক্যারিয়ারের আট নম্বর সেঞ্চুরি করতে দরকার তখন মাত্র ৫ রান। কিন্তু সেটাই তিনি করতে পারেননি। আসরে নিজের খামখেয়ালিতে করা হয়নি! থেমে যান ৯৮ রানে। সেঞ্চুরি হয়তো পাননি। না করার আক্ষেপে পুড়বেন আজীবন। তারপরও সারা জীবন মনে রাখবেন প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামকে। ব্যক্তিগত ৮ রানের মাথায় বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ৬ হাজার রানের বর্ণিল মাইলফলক গড়েন মুশফিক। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের আগে ৬ হাজারি ক্লাবে নাম লিখেন তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান। সব মিলিয়ে বিশ্বের ৬১ নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে এই কীর্তি গড়েন সাবেক অধিনায়ক।
প্রথম ওয়ানডেতে হেরে তামিম বাহিনী পিছিয়ে পড়েছিল সিরিজে। সমতা আনতে জয়ের বিকল্প ছিল না ম্যাচে। কিন্তু চাপের কাছে হেরে যায় তামিম বাহিনী। গতকালের ম্যাচটি ছিল সিরিজে ফেরার। মাইলফলক গড়ার হাতছানি ছিল মুশফিকের পাশাপাশি তামিম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদেরও। মুশফিক রেকর্ড গড়লেও ব্যর্থ হয়েছেন দুজনে। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের সুযোগ ছিল ১২৯ রানের একটি ইনিংস খেলে প্রথম টাইগার ক্রিকেটার হিসেবে ৭ হাজারি ক্লাবে নাম লেখানোর। কিন্তু ইসুরু উদানার বলে প্লেড অন হয়ে সাজঘরে ফেরার পথে ১৯ রানের বেশি করতে পারেননি। ৪ হাজারি ক্লাবে নাম লিখতে মাহমুদুল্লাহর দরকার ছিল ২১ রান। কিন্তু ৬ রানের বেশি করতে পারেননি। দুই সিনিয়রের ব্যর্থতার দিনে ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়ে দলের ত্রাণকর্তা হয়েছিলেন মুশফিক।

দল যখন চাপের ভারে নুইয়ে পড়ে, তখন বুক চিতিয়ে লড়াই করেন মুশফিক। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৩৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা দলকে একাই টেনে নিয়ে যান মুশফিক। সাব্বির রহমানকে নিয়ে পঞ্চম উইকেট জুটিতে বুক চিতিয়ে লড়াই করে যোগ করেন ১১১ রান। খেলেন ৮৬ বলে ৬৭ রানের ইনিংস। গতকাল খেললেন ৯৮ রানের লড়াকু ইনিংস। তিন অংকের জাদুকরী ইনিংস ছুঁতে শেষ ওভারে তার দরকার ছিল মাত্র ৫ রান। কিন্তু নিজের খামখেয়ালিতে ৩ রানের বেশি নিতে পারেননি। ইনিংস শেষে তাই অপরাজিত থাকতে হয়েছে ৯৮ রানে।
বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ৬ হাজার ক্লাবে নাম লেখান সিরিজের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তামিম। ২০৩ ম্যাচের ২০১ ইনিংসে বাঁ হাতি ওপেনারের রান ৬৮৯০। সেঞ্চুরি ১১ এবং হাফসেঞ্চুরি ৪৭। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিবের রান ২০৬ ম্যাচের ১৯৪ ইনিংসে ৬৩২৩। সেঞ্চুরি ৯ এবং হাফসেঞ্চুরি ৪৭। মুশফিকের রান ২১৫ ম্যাচের ২০১ ইনিংসে ৬০৯০। সেঞ্চুরি ৭ এবং হাফসেঞ্চুরি ৩৭টি।