শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

শিরোপা জয়ের মন্ত্র জানে যুবারা!

এই দল নিয়ে শিরোপা জয়ের ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী আকবর! এখন ক্যাপ্টেনের চাপমুক্ত থাকার মন্ত্রটা ফাইনালে সবাই মনে রাখলেই হয়!

মেজবাহ্-উল-হক

শিরোপা জয়ের মন্ত্র জানে যুবারা!

আর মাত্র একটি ধাপ পার হলেই শিরোপা। স্বপ্ন পূরণ হয়ে যাবে বাংলাদেশের। টাইগার যুবারা যেন শিরোপার স্বপ্নে বিভোর। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে ইতিমধ্যেই আকবররা নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। এবার তাদের চোখ শিরোপায়।

ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ টানা তিনবারের ফাইনালিস্ট বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত। তাতে মোটেও চিন্তিত নন টাইগাররা। যুবাদের মনোবল অটুট। তারা ভারতকে হারিয়েই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে মেতে উঠতে চান।

শিরোপা জয়ের মন্ত্রও জানে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল! কী সেই মন্ত্র?

যে মন্ত্র দিয়ে বাংলাদেশ দল নিউজিল্যান্ডকে কুপোকাত করে দিয়েছে একই মন্ত্র ব্যবহার করবে ভারতের বিরুদ্ধেও। সে মন্ত্রটি হচ্ছে ‘চাপমুক্ত’ থাকা!

চাপমুক্ত থেকেই কিউইদের বধ করেছে যুবা টাইগাররা। সেমিফাইনালে দেখা গেছে, ম্যাচের পুরোটা সময় যেন হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন ক্রিকেটাররা। সেমিফাইনালের মতো বড় ম্যাচের চাপটা তারা নেয়নি। আর এ কারণেই নিজেদের শতভাগ উজাড় করে দিতে পেরেছেন তারা!

নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে অধিনায়ক আকবর আলী বলেছিলেন, ‘আমরা চাপমুক্ত থাকতে চাই। এটি আমাদের কাছে অন্য ১০টা ম্যাচের মতোই একটি ম্যাচ। এটা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।’

কিউইদের বিরুদ্ধে শেষ চারের লড়াইয়ে জয়ের পরও প্রায় একই কথা বলেছেন। টাইগার দলপতি বলেন, ‘জানি, ভারত খুব শক্তিশালী দল। তবে এটা ভেবে চাপ নিতে চাই না। আমরা কেবল স্বাভাবিক খেলাটা প্রদর্শন করব।’

গত আসরের মতো এবারও ভারতের দলটা অনেক শক্তিশালী। বিশেষ করে, তাদের বোলিং খুবই ভয়ঙ্কর। এই আসরে অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে গড় সবচেয়ে ভালো। তবে সুখের খবর হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। বোলিং গড়ে দ্বিতীয় স্থানে কিন্তু টাইগাররাই। তাই লড়াইটা যে হাড্ডাহাডি হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখানে যারা ঠান্ডা মাথায় খেলতে পারবেন জয় তাদেরই হবে। সে কারণেই বার বার ‘চাপমুক্ত’ থাকার কথা বলেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।

স্পিন কিংবা পেস-বোলিংয়ের দুই বিভাগেই দুর্দান্ত বাংলাদেশ। দুই পেসার সাকিব ও শরিফুল দুর্দান্ত বোলিং করছেন। গতির সঙ্গে বৈচিত্র্য হচ্ছে মূল অস্ত্র শরিফুলের। কিন্তু ১৭ বছর বয়সী সাকিবের শক্তি তার নিখুঁত লাইন-লেন্থে।

স্পিনে রকিবুল হাসান এই আসরে রীতিমতো আতঙ্ক হয়ে উঠেছেন। কোয়ার্টার ফাইনালে মাত্র ১৯ রানে ৫ উইকেট নিয়ে একাই ধসিয়ে দিয়েছিলেন স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সেমিফাইনালেও তার বোলিংয়ের শুরুটা ছিল অসাধারণ। প্রথম ২০ বলে তিনি কোনো রানই দেননি। যদিও পরের দিকে বেশ রান দিয়েছেন। তার পরও ১০ ওভার বোলিং করেছেন, দিয়েছেন মাত্র ৩৫ রান। ফাইনালে তার দিকেই তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।

সেমিতে দারুণ বোলিং করেছেন আরেক স্পিনার হাসান মুরাদ। ১৮ বছর বয়সী এই তরুণ ৩৪ রানে নিয়েছেন দুই উইকেট। সব মিলে বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট দুর্দান্ত।

বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপও অসাধারণ। সব শেষ ম্যাচে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে মাহমুদুল হাসান জয় তো তার সামর্থ্য দেখিয়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া তামিম, ইমন, হৃদয়, আকবরও দারুণ ব্যাটিং করেন। টাইগার যুবাদের ফিল্ডিংও অসাধারণ। সেমিতে মিডঅনে জয় যে ক্যাচটি নিয়েছেন সেটি হতে পারে টুর্নামেন্টেরই সেরা ক্যাচ।

এই দল নিয়ে শিরোপা জয়ের ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী আকবর! এখন ক্যাপ্টেনের চাপমুক্ত থাকার মন্ত্রটা ফাইনালে সবাই মনে রাখলেই হয়!

সর্বশেষ খবর