শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

রেকর্ড বইয়ে শান্ত-মুমিনুল

আসিফ ইকবাল

রেকর্ড বইয়ে শান্ত-মুমিনুল

লাহিরু কুমারাকে যখন ফিরতি ক্যাচটি দেন নাজমুল হোসেন শান্ত, তখন অবয়বে স্পষ্ট দীর্ঘ ব্যাটিংয়ের ক্লান্তির ছাপ। আত্মবিশ্বাসের চূড়ায় থেকে যেভাবে ব্যাটিং করছিলেন নাজমুল, তাতে ১৬৩ ছাপিয়ে অভিষেক সেঞ্চুরিকে ডাবল সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারতেন। কিন্তু পারেননি। সপ্তম টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি থেমে যায় ১৬৩ রানে। শুধু নাজমুল কেন, টাইগার টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুলের সেঞ্চুরির মাহাত্ম্য আলাদা।

ক্যারিয়ারে এটা মুমিনুলের ১১ নম্বর, কিন্তু দেশের বাইরে প্রথম। দুজনের জুটি আবার বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসকে নতুনভাবে লিখেছে। দুজনে একত্রে ব্যাট করে যোগ করেছেন ২৪২ রান, যা বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে তৃতীয় উইকেট জুটিতে সেরা। আগের রেকর্ডটি ছিল ২৩৬ রানের। সেই জুটিতে ছিলেন মুমিনুল ও মুশফিকুর রহিম। তবে রানের হিসেবে ২৪২ রানের জুটিটি বাংলাদেশের পঞ্চম সেরা। ২১ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে ২০০ রানোর্ধ্ব জুটি রয়েছে ১১টি। ৩০০ রানের জুটি মাত্র দুটি। সর্বোচ্চ ৩৫৯ রান, সাকিব ও মুশফিকের পঞ্চম উইকেট জুটিতে।

দুজনে তৃতীয় উইকেট জুটিতে রেকর্ড গড়েছেন। ব্যাটিং করেছেন ধীরলয়ে। আর ৫টি বল বেশি খেললেই দুই বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান গড়ে ফেলতেন সবচেয়ে বেশি বল খেলার রেকর্ড। ২৪২ রানের জুটিতে গড়তে নাজমুল শান্ত ও মুমিনুল বল খেলেন ৫১৪টি। তবে জুটিতে সবচেয়ে বেশি বল খেলার রেকর্ড মোহাম্মদ আশরাফুল ও মুশফিকুর রহিমের। ২০১৩ সালে গলে দুজনে পঞ্চম জুটিতে ২৬৭ রান যোগ করেছিলেন। সেটা করতে বল খেলেছিলেন ৫১৮ বল। ওই টেস্টে মুশফিক বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন। বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে ৫০০ বলের ওপর খেলা জুটি মাত্র দুটি। এর আগে ২০০৫ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জাভেদ ওমর বেলিম গুল্লু ও নাফিস ইকবাল ৪৯৮ বল খেলেছিলেন। তৃতীয় উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড শ্রীলঙ্কার দুই কিংবদন্তী ক্রিকেটার কুমার সাঙ্গাকারা ও মাহেলা জয়াবর্ধনার। ২০০৬ সালে দুজনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কলম্বোয় দুজনে ৬২৪ রান করেছিলেন।

নাজমুল প্রথম দিনেই সেঞ্চুরি করেছিলেন। গতকাল শুরুতে দেখে শুনে খেলা শুরু করে ১৬৩ রানে থামেন। ৩৭৮ বলের ইনিংসটিতে ছিল ১৭টি চার ও একটি ছক্কা। অভিষেক টেস্ট সেঞ্চুরিতে সবচেয়ে বেশি বল খেলার হিসেবে এটা দ্বিতীয়। সবচেয়ে বেশি বল খেলার রেকর্ড আমিনুল ইসলাম বুলবুলের, ৩৮০ বল। নাজমুলের মতো ধীরলয়ে ব্যাটিং করেন অধিনায়ক মুমিনুলও। ৩০৪ বলে ইনিংসটিতে ছিল মাত্র ১১টি চার। দুজনের রেকর্ড জুটিতে গতকাল আলোর স্বল্পতায় খেলা বন্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ৪৭৪। এখন কথা হচ্ছে, কোথায় গিয়ে থামবে টাইগারদের ইনিংস? ইতিমধ্যে টেস্টের দ্বিতীয় দিনও শেষ। প্রথমদিন মুমিনুলদের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ৩০২ রান। গতকাল মুমিনুলরা যোগ করেন ১৭২।

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এর আগে ৫ টেস্ট খেলেছে সবগুলোতে। ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে দুটি করে হার এবং পাকিস্তানের কাছে এক হার। এবারই প্রথম কোনো টেস্টে ভালো ব্যাটিং করেছে টাইগাররা। ফেব্রুয়ারিতে ঘরের মাটিতে ফেবারিট হয়েও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে গিয়েছিল।

সর্বশেষ খবর